সমাজ কী? সমাজের প্রকারভেদ, উপাদান এবং গুরুত্ব

সমাজ কী বা সমাজ কাকে বলে?

সমাজ হলো এমন এক ব্যবস্থা যেখানে একাধিক চরিত্র একত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম প্রতিষ্ঠা করে একত্রে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে থাকে। অর্থাৎ একাধিক ব্যক্তি একত্র হয়ে যে নিয়ম তৈরি করে বসবাস করে, তাকেই সমাজ বলে। এটি মানুষের মধ্যে আদর্শ, মর্যাদা, সামাজিক নীতি, সংস্কৃতি, শ্রেণীবিশেষ, সমাজতাত্ত্বিক আদর্শ, রচনা ও অস্তিত্ববিশেষ নীতি সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়ে বিশেষভাবে প্রভাব ফেলে।

সমাজ কী? সমাজের প্রকারভেদ, উপাদান এবং গুরুত্ব

সমাজ কত প্রকার ও কী কী?

সমাজের প্রকারভেদ বিভিন্নজন বিভিন্ন কিছুর প্রেক্ষিতে করেছেন। নিচে এমন কয়েকটি প্রকারভেদ দেখা যাক।

সময়কালের ভিত্তিতে

সময়কালের ভিত্তিতে সমাজ ৬ প্রকার। যথা:

  • আদিম সমাজ
  • দাসভিত্তিক সমাজ
  • সামন্ততান্ত্রিক সমাজ
  • পুঁজিবাদী সমাজ
  • সমাজতান্ত্রিক সমাজ
  • সাম্যবাদী সমাজ

নৃবিজ্ঞানের ভিত্তিতে

নৃবিজ্ঞানের ভিত্তিতে সমাজ ৬ প্রকার। যথা:

  • শিকার ও খাদ্য সংগ্রহমূলক সমাজ
  • উদ্যান ও কৃষিভিত্তিক সমাজ
  • পশুপালনভিত্তিক সমান
  • কৃষিভিত্তিক সমাজ
  • শিল্পভিত্তিক সমাজ
  • আধুনিকোত্তর সমাজ

সমাজতাত্ত্বিক এবং নৃতাত্ত্বিক

 নৃতাত্ত্বিক ও সমাজতাত্ত্বিক উভয়ের ভিত্তিতে সমাজ ৭ প্রকার:

  • ক্ষুদ্র সংঘবদ্ধ সমাজ
  • স্থায়ী কৃষিভিত্তিক সমাজ
  • নগর রাষ্ট্রভিত্তিক সমাজ
  • সাম্রাজ্য
  • সামান্তবাদী সমাজ
  • পুঁজিবাদী সমাজ
  • সমাজতান্ত্রিক সমাজ

এরকম আরও বিভিন্ন কিছুর উপর ভিত্তি করে সমাজের প্রকারভেদ করা যেতে পারে।

সমাজের উপাদান কী কী?

সমাজের উপাদান নিয়েও রয়েছে বিভিন্ন মত। অনেকের মতে সমাজের প্রধান উপাদানগুলো হলো:

  • আদর্শ, মূল্যবোধ, বিশ্বাস
  • সৃষ্ট এবং ব্যবহৃত বস্তু
  • মানুষ

এছাড়াও সমাজের উল্লেখযোগ্য উপাদান হিসেবে উল্লেখ করা যায়:

  • ব্যক্তি
  • পরিবার
  • গোষ্ঠী
  • ধর্ম
  • চেতনা ইত্যাদিকে

সমাজের কেন প্রয়োজন? মানুষ কেন সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে?

সমাজের প্রয়োজনীয়তা অনেকগুলো দিক থেকে বিবেচনা করা যেতে পারে:

১. মানবিক সম্পর্ক ও সমর্থন

সমাজ মানবিক যেসব প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সাহায্য প্রদান করে, যেমন প্রেম, সমঝোতা, সম্পর্ক গড়ে তোলা, আলোচনা ও সাহায্য।

২. নীতি এবং নিয়মের গঠন

সমাজ স্বাধীন থাকার জন্য নীতি এবং নিয়ম প্রদান করে, যা ব্যক্তিরা সম্পর্কিত সমস্যার সমাধানে সহায়ক হতে পারে।

৩. সম্প্রদায় ও সংস্কৃতির সম্ভাবনা

সমাজ মানুষের সম্প্রদায় ও সংস্কৃতির পরিবর্তন করে সাধারণভাবে গঠিত এবং সংরক্ষিত রাখে।

৪. একতা এবং অবাধ্যতা

সমাজ মানুষের সাথে পরামর্শ, পরামর্শ, এবং অবাধ্যতার সুযোগ দেয়, যাতে সমাজের সকল ব্যক্তির কার্যকলাপে সমস্ত পক্ষের সামগ্রিক অগ্রগতি হয়।

৫. সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মর্যাদা

সমাজ বিভিন্ন বিষয়ে ন্যায়বিচার এবং মর্যাদা প্রদান করে, যা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।

মানুষ সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করে কারণ এটি তার প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা এবং মানবিক সম্পর্ক বিকাশের সাথে প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কিছু প্রদান করে। মানুষ একা থাকলে তার সামাজিক প্রক্রিয়াগুলি অসম্ভব হতে পারে যা সমাজের মাধ্যমেই সম্ভব হয়। সমাজে থাকা মানুষ পরস্পরের সহানুভূতি, সহযোগিতা, আদালত ও নীতি পরিবর্তনের প্রতি আদর্শবান হয়। সমাজবিহীন থাকা মানুষের জন্য প্রায় অসম্ভব।

সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক

সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক হলো একটি গভীর এবং প্রকৃতিগত সম্পর্ক, যা মানুষের জীবনের অস্তিত্বের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। মানুষ সমাজের অংশ হিসেবে তার পরিবেশের সাথে একত্রিত হয় এবং এর মাধ্যমে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রক্রিয়াগুলির অংশ হয়। এই সম্পর্কের মাধ্যমে মানুষ অন্যদের সাথে সম্পর্কিত হয়, অন্যদের থেকে শিখে এবং তার পরিবেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও সামঞ্জস্যতা অর্জন করে। মানুষ সমাজ গঠনের মূল উপাদানগুলোর একটি।

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺