সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধুর বৈদেশিক নীতির ইতিবাচক দিকসমূহ উল্লেখ কর

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয় ১৬ই ডিসেম্বর। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি পায় ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের এই বাংলাদেশ। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২-এ শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে ফেরত আসেন। এরপর দেশ পূনর্গঠনে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেন। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো বৈদেশিক নীতি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দুটি সেক্টর সম্পর্কে জানতে পড়ুন: "স্বাধীনতা যুদ্ধের দুটি সেক্টর।"

সংক্ষেপে বঙ্গবন্ধুর বৈদেশিক নীতির ইতিবাচক দিকসমূহ উল্লেখ কর

নতুন রাষ্ট্র হিসেবে বৈদেশিক নীতি অত্যন্ত গুরুতপূর্ণ একটি বিষয় ছিল। অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি অর্জন, বিভিন্ন সহায়তা লাভ, বাণিজ্য চুক্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে বৈদেশিক নীতি গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার পর তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈদেশিক নীতি কেমন হবে তা ছিল আলোচনার বিষয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈদেশিক নীতির ইতিবাচক দিকসমূহ সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো: 

১. সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়

বঙ্গবন্ধু তার বৈদেশিক নীতিতে সকলের সাথে সু-সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি "সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়" এই নীতি অনুসরণ করেন। তবে পৃথিবীর একটি দেশের সাথে তিনি বাংলাদেশের সকল ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন ঘোষণা করেন। দেশটি বর্তমানে (২০২৪ এর জুন পর্যন্ত) গণহত্যা চালাচ্ছে।

২. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং বিভিন্ন দেশের সাথে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সাথে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করেন।

৩. জাতিসংঘের সদস্যপদ

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের স্বীকৃতি ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। তিনি জাতিসংঘে বাংলাতে ঘোষণাও দেন। জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভের কারণে বাংলাদেশ বৈদেশিক সহায়তা পায় যা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ছিল।

৪. সম্প্রসারিত কূটনৈতিক সম্পর্ক

বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেন। এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে বাংলাদেশকে বৈশ্বিক পর্যায়ে পরিচিত করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনেক ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ রয়েছে।

৫. অর্থনৈতিক উন্নয়ন

বঙ্গবন্ধু বৈদেশিক সাহায্য ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য কাজ করেন, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়ক হয়। যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্যই বৈদেশিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও বেশি সময় পরও অর্থনীতির ব্যাপারে বৈদেশিক সহায়তার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। সেখানে কেবলমাত্র যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশের জন্য এটি ছিল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

বঙ্গবন্ধুর বৈদেশিক নীতি দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষা করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সহায়ক হয়।

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺