Palestine Flag We support Palestine — Standing for justice, freedom, and human rights.

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু আলোচনা কর

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করলেও পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি করে। এছাড়া বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) মানুষের উপর অর্থনৈতিক শোষণ তখন ছিল স্বাভাবিক বিষয়। এসবের বিরোধিতা করে শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রবিবার বিকেল ৩টায় রেসকোর্স ময়দানে একটি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। রেসকোর্স ময়দানের বর্তমান নাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মূল বিষয়বস্তু আলোচনা কর

তার ভাষণের ব্যপ্তি ছিল মাত্র ১৮ মিনিট। কিন্তু এই ১৮ মিনিটের ভাষনই ৭ কোটি বাংলাদেশিকে সেদিন জাগিয়ে তুলেছিল নতুন করে। এই ভাষণ বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন "ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।"

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের মূল কিছু বিষয়বস্তু রয়েছে। তার মধ্য থেকে কয়েকটি নিচে উল্লেখ করা হলো:

১. বাঙালির অধিকার ও স্বাধীনতার দাবি

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, বাঙালি জাতি তাদের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান এবং বলেন যে, এই অন্যায়ের অবসান ঘটাতে হবে।

২. আন্দোলনের নির্দেশনা

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে দেশের জনগণকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। তিনি চারটি নির্দেশনা দেন:

  • প্রত্যেক গৃহে দুর্গ গড়ে তোলা
  • শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত থাকা
  • কর্মস্থলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া
  • এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারের সাথে সহযোগিতা না করা।

৩. অহিংস আন্দোলন

বঙ্গবন্ধু অহিংস আন্দোলনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন যে, বাঙালিরা কোনো প্ররোচনায় পা দেবে না। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

৪. স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি

বঙ্গবন্ধু বলেন, "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।" এই ঘোষণা ছিল স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতির নির্দেশনা, যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি স্থাপন করে।

৫. একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির একতা ও সাম্য বজায় রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন যে, সকলকে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে হবে এবং কোনোরকম ভেদাভেদ বা বিভেদ সৃষ্টি করা চলবে না।

৭ মার্চের এই ভাষণের মাত্র কয়েকদিন পর পাকিস্তানিরা এদেশের সাধারণ, নিরস্ত্র মানুষদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে ২৫ মার্চের রাতে। সেই রাত থেকেই শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ যার সমাপ্তি ঘটে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

৭ মার্চের সম্পূর্ন ভাষনটি শুনতে চাইলে দেখতে পারেন নিচের ভিডিয়োটি।


Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺