বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি কী?

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বিষয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন "বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি কী?"। এই প্রশ্নটি অন্যভাবেও আসতে পারে। যেমন, "বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি সম্পর্কে লিখ।"

বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি কী?

বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস অনেক পুরোনো, অনেক বিশাল। এই বিশাল যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ "বসু-সোহওয়ার্দী চুক্তি বা প্রস্তাব।" মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহর দেয়া দ্বিজাতি তত্ত্ব এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রস্তাবিত লাহোর প্রস্তাবের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ধর্মভিত্তিক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র। এই আলোকে পাকিস্তান এবং ভারত নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার কথা। সেখানে ভাষা বা অন্য দিকগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কিন্তু ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া হয় যে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা পাচ্ছে। সেসময় বাংলা ভাষাভাষী পুরো অঞ্চল একসাথে রাখার দাবিতে একটি চুক্তি হয় যা ইতিহাসের পাতায় বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি নামে পরিচিত।

অখন্ড স্বাধীন বাংলার গঠনের উদ্দেশ্যে শরৎ বসু এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কিছু নীতি এবং পরিকল্পনা গঠন করেন। এ নিয়েই ১৯৪৭ সালের ১২-২০ মে মুসলিম এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দ লম্বা আলোচনা করেন। আলোচনায় দুই বাংলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গণ্যমান্য অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন:

  • বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী
  • আবুল হাশিম মুসলিম লীগের প্রাদেশিক সেক্রেটারি
  • বগুড়ার মন্ত্রী মোহাম্মদ আলী
  • ঢাকার মন্ত্রী ফজলুর রহমান
  • বাংলার কংগ্রেস নেতা কিরণশঙ্কর রায়
  • ফরয়ার্ড ব্লকের ন্তে শরৎচন্দ্র বসুসহ আরও অনেকেই।

১৯৪৭ সালের ২০ মে তারিখে শরৎ বসুর কলকাতার বাসভবনে এক সম্মেলনে একটি শাসনতান্ত্রিক কাঠামোর খসড়া রচিত হয়। এই খসড়াই "সোহরাওয়ার্দী-বসু চুক্তি" বা "বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তি" নামে পরিচিত। মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে এখানে সাক্ষর করেন আবুল হাশিম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বসু নিজেই।

বসু-সোহরাওয়ার্দী চুক্তিতে বলা হয় বাংলা হবে স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র যেখানে হিন্দু এবং মুসলিমদের সংখ্যার অনুপাতে আসন বন্টন করা হবে। এতে ৩০ সদস্য বিশিষ্ট গণপরিষদের প্রস্তাবও ছিল।

বাংলাকে অখন্ড রাখতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত এই দাবি কার্যকর হয়না। বাংলা দ্বিবিভক্ত হয়ে যায়। একাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে বর্তমান বাংলাদেশ এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হয় এবং অন্য অংশ হিন্দু জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে ভারতের অংশ হয়।

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺