ইংরেজি প্রথম পত্রে কীভাবে উত্তর করলে বেশি মার্ক পাওয়া যায়?

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এসএসসি, এইচএসসি এর রেজাল্ট অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। গত কয়েকবছর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা নিতে না পারায় দেখা গেছে অনেকে এসএসএসির অংশটুকুতে খুব ভালো করেও জেএসসি পরীক্ষার খারাপ ফলাফলের কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হলে ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ হ্রাস পেয়ে যায়। এইচএসসি পরীক্ষায় রেজাল্ট আশানুরূপ না হলে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর ভর্তি পরীক্ষাও দেয়া যায় না। তাই ফলাফল এক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। এটা উচিত কি উচিত না- সেই প্রশ্নে আজ যাচ্ছি না। আজ আমরা আলোচনা করব এই ভালো রেজাল্ট করার পেছনের ছোট একটি অন্তরায় নিয়ে এবং কীভাবে সেখানে ভালো করা যেতে পারে তা নিয়ে। তাহলে শুরু করা যাক।

ইংরেজি প্রথম পত্রে কীভাবে উত্তর করলে বেশি মার্ক পাওয়া যায়?

পরীক্ষায় আমাদের যে ফলাফল হবে সেখানে সর্বোচ্চ গ্রেড হচ্ছে ৫.০০। এসএসসি এবং এইচএসসিতে সব বিষয়ে এ প্লাস না পেয়েও চতুর্থ বিষয় দিয়ে জিপিএ ৫.০০ পাওয়া যায়। কিন্তু যারা সব বিষয়েই ৫.০০ গ্রেড লাভ করে তাদের সেই ফলাফলকে আবার বলা হয় গোল্ডেন এ প্লাস (Golden A+)। সব বিষয়ে জিপিএ ৫.০০ পাওয়া কতটা সম্ভব?

প্রথমেই আসবে বাংলার কথা। আমি এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছি নটর ডেম কলেজ থেকে। আমার সাথে আমার আরও অনেক সহপাঠীরাও দিয়েছে। প্রত্যেকের উত্তর তো আর একই হবে না। তাই একই সমান মার্ক না পাওয়াটা অবাক করা কিছু না। কিন্তু যখন রোলের সিরিয়াল অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্র পর্যন্ত ৮০ এর বেশি মার্ক পায় এবং বাকিরা কেউই ৮০ পায় না তখন বলাই যায়, প্রথম অংশের শিক্ষার্থীদের উত্তরগুলো যে শিক্ষক দেখেছেন, তিনি ছাত্রদের মার্ক দিয়েছেন, আর তারপর যিনি দেখেছেন তিনি ৭ সৃজনশীলে গণভাবে সবাইকে ৭ করে মার্ক দিয়ে ৪৯ দিয়েছে। বহুনির্বাচনীতে ৩০ এর ৩০ পেলেও ৭৯ হয়েছে, ৮০ হয়নি। এভাবে পরীক্ষার খাতা মার্কিং করা নতুন না। বাংলা এবং ইংরেজিতেই এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। এই লেখাটি বাংলা নিয়ে না, ইংরেজিতে ঠিক কোথায় চ্যালেঞ্জ এবং সেখান থেকে নিজের বেঁচে আসতে ঠিক কোন পন্থা অবলম্বন করা যেতে পারে তা নিয়েই আলোচনা করব।

ইংরেজিতে A+ পাওয়া কেন কঠিন?

ইংরেজিতে ১০০ এর মধ্যে ৮০ তোলা অনেকের জন্যই কষ্টসাধ্য। কেন? কারণটা আমরা সর্বশেষ পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে হওয়া পরীক্ষার মানবটন নিয়ে আলোচনা করে বুঝানোর চেষ্টা করি তাহলে।

মানবন্টনটা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে আসলে একটু এদিক ওদিক হলেই A+ আর নাও পাওয়া যেতে পারে। এমন মানবন্টন আসলে কতটা ইফেক্টিভ সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই, সে প্রশ্নে আজ যাচ্ছি না। প্রথমেই আসা যাক এসএসসির ইংরেজি প্রথম পত্রের কথায়। এখানে শুরুতে এমসিকিউতে ৭, কিছু প্রশ্নের উত্তরে ১০, ইনফরমেশন গ্যাপে ৫, ফিল ইন দ্যা গ্যাপে ৫, সামারিতে ১০, কলাম ম্যাচে ৫, রিঅ্যারেঞ্জিংয়ে ৮, প্যারাগ্রাফ রাইটিংয়ে ১০, কমপ্লেটিং স্টোরিতে ১০, গ্রাফ অ্যান্ড চার্টে ১০, লেটারে ১০ এবং সবশেষে ডায়লগ রাইটিংয়ে ১০ মার্ক। এই হলো মোট ১০০।

এই ১০০ এর মধ্য থেকে ৫০ মার্ক কিন্তু সরাসরি রাইটিং পার্টে। সাথে সামারি রাইটিং এবং ২ নম্বর প্রশ্নের ৫টি প্রশ্নের ১০+১০=২০ মার্ক যুক্ত করলে রাইটিংয়ে থাকা মার্কই ৭০। এখানে যারা খাতা দেখেন তাদের বেশিরভাগ শিক্ষকরাই গুড়পরতাভাবে মার্কিং করে থাকে। এই ৭০ এর মধ্য থেকে যদি ৭+৮+৮+৮+৮+৮+৮ করেও পাওয়া যায় তবে মার্ক পাওয়া যাবে ৫৫। এ প্লাস পেতে বাকি ৩০ এ পেতে হবে ২৫। কোনোভাবে রিঅ্যারেঞ্জিংয়ে একটু ভুল হয়ে গেলেই হয়তো এ প্লাস মিস। আর যদি স্যার এই ৭০ এ ৫০ এরও কম মার্ক দেন, তবে কিন্তু এ প্লাস পাওয়া আসলেই দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

ইংরেজি ২য় পত্রের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। এখানে গ্রামার অংশে ৬০ মার্ক এবং রাইটিং অংশে ৮+১০+১০+১২ করে বাকি ৪০ মার্ক। কেউ যদি সিভিতে ৭ এর মাঝে ৭, প্যারাগ্রাফ এবং লেটারে ৮+৮ এবং কমপোজিশনে ৯ পায় তবে তার মোট মার্ক হবে ৩২। এ প্লাস পেতে চাইলে তার দরকার বাকি ৬০ থেকে ৪৮। গ্রামার অংশে ১১টি প্রশ্ন। ১১টি প্রশ্ন থেকে ১ মার্ক করে ভুল উত্তর দিলেই ৬০ - ১১ = ৪৯ আসে। টোটাল মার্ক ৮১। এর মধ্যে আর একটু এদিক-ওদিক হয়ে গেলেই কিন্তু ৮০ মার্ক আর ওঠছে না।

অর্থাৎ এটুকু হয়তো মানার মতো যে, ইংরেজিতে এ প্লাস পাওয়া আসলেই কষ্টকর। একই ব্যাপার এইচএসসি শিক্ষার্থীরাও মিলিয়ে নিতে পারবে। তাহলে কী করলে আশা করা যায় যে বেশি মার্ক পাওয়া যাবে? এমন কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনার করব এই লেখায়।

ইংরেজিতে A+ পেতে যেসব কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে

পরীক্ষার খাতাগুলো যিনি/যারা দেখে থাকেন, তাদেরকে কিন্তু অল্প সময়ে অনেক বেশি খাতা দেখতে হয়। তাদের পক্ষে আসলে সেই সময়টুকুতে এতো খাতা ভালোভাবে দেখে মূল্যায়ন করা সম্ভব না। যতটুকু আবার সম্ভব, তারা ততটুকু চেষ্টাও করে না অনেকেই। তাই মনে রাখতে হবে, শিক্ষক খাতা না পড়লেও খাতা দেখবেন। আমি যদি আমার উত্তরপত্র সুন্দরভাবে সাজাতে পারি তবে শিক্ষক আমাকে একটু বেশি মার্ক দিলেও দিতে পারেন। এজন্য প্রথম কথা হচ্ছে, আমার উত্তরপত্র দেখতে গিয়ে যেন শিক্ষকের মেজাজ নষ্ট না হয়। এজন্য কী কী করতে পারি?

প্রথমেই যা করা যেতে পারে, তা হচ্ছে খাতায় কাটাকাটি থাকবে না, লেখা সুন্দর না হলেও স্পষ্ট যেন থাকে। দ্বিতীয়ত একটি ব্যাপার অবলম্বন করা উচিত। তা হচ্ছে ১ নং প্রশ্ন থেকে একদম শেষ প্রশ্ন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে লিখে যাওয়া। কোনোটি না পারলে তার জন্য কী পরিমাণ পৃষ্ঠা প্রয়োজন হতে পারে তা আন্দাজ করে সে পরিমাণ বাদ রেখে বাকিগুলো উত্তর করে আবার ফিরে আসা সেখানে। তৃতীয়ত এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এক পৃষ্ঠায় একটি প্রশ্নের উত্তর শেষ হয়ে গেলে সে পৃষ্ঠায় অন্য প্রশ্নের উত্তর শুরু না করা। তা অন্য পৃষ্ঠায় গিয়ে শুরু করা। এতে উত্তরপত্রটি দেখতে ভালো দেখাবে। শিক্ষকের মেজাজ নষ্ট হবে না, গোছানো খাতা দেখে তার ভালো লাগতে পারে এবং এতে অনাকাঙ্ক্ষিত খারাপ ফলাফল এড়ানো যেতে পারে। ইন শা আল্লাহ, প্রাথমিকভাবে এই স্ট্রেটেজি ফলো করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

রাইটিং পার্টের উত্তরগুলোও একটু কৌশলের সাথে করা উচিত। এজন্য আমাদের আলাদা ব্লগপোস্ট আছে। সেসবের লিংক এখানে দিয়ে দেব। তবে প্রথমে প্যারাগ্রাফে কীভাবে বেশি মার্ক পাওয়া যেতে পারে তা জানতে নিচের ভিডিয়োটি দেখে নেয়া যাক।


বাকি রাইটিং পার্টের কয়েকটি লেখার কিছু নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো।
এছাড়াও গ্রামারের অনেক বিষয় নিয়েও আমাদের সাইটে লেখা আছে। চাইলে ঘুরে দেখতে পারেন যা আপনার প্রয়োজন।
Md. Rabiul Mollah

Okay! So here I'm Md. Rabiul Mollah from Pathgriho Network. I'm currently a student of B.Sc in Textile Engineering Management at Bangladesh University of Textiles. facebook instagram github twitter linkedin

Previous Post Next Post

এই লেখাটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ওয়ালে শেয়ার করুন 😇 হয়তো এমনও হতে পারে আপনার শেয়ার করা এই লেখাটির মাধ্যমে অন্য কেউ উপকৃত হচ্ছে! এবং কারো উপকার করার থেকে ভাল আর কি হতে পারে?🥺