বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের সূত্র বা আর্কিমিডিসের নীতি পদার্থবিজ্ঞানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। আর্কিমিডিসের নীতির উপর ভর করেই বিজ্ঞান জগতে অনেক কিছুর আবিষ্কার ঘটেছে। বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের নীতি থেকেই প্লবতারও উৎপত্তি, বলতে গেলে আর্কিমিডিসের নীতিই প্লবতার নীতি। আজ আমরা এসব বিষয় নিয়েই বিস্তারিত জানব, গাণিতিক সমস্যার সমাধানও করব। তাহলে শুরু করা যাক।
আর্কিমিডিসের নীতিটি আবিষ্কারের পেছনে একটি মজার গল্প আছে। শুরুতে তাহলে সেটিই জেনে নেয়া যাক।
আর্কিমিডিসের নীতি আবিষ্কারের ইতিহাস
আমরা হয়তো ছোটবেলায় শুনে থাকবো যে, কোনো এক বিজ্ঞানী উলঙ্গ হয়ে "Eureka! Eureka!" বলে চিৎকার করেছিলো পুরো শহরে। কে সেই বিজ্ঞানী? তিনিই এই আর্কিমিডিস। পুরো গল্পটি জানা যাক।
সাইরাকিউস শহরের রাজা সেসময় হিয়েরো। রাজা হিয়েরো একটি মুকুট বানালেন এক স্বর্ণকারকে দিয়ে। স্বর্ণকারও রাজার হুকুমমতো স্বর্ণ দিয়ে একটি স্বর্ণের মুকুট বানিয়ে দিলেন। তবে মুকুট বানিয়ে নেয়ার পর রাজার মাথায় একটি চিন্তা আসলো। স্বর্ণকার আসলেই খাঁটি স্বর্ণ দিয়ে মুকুট বানিয়েছিলো তো?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসকে আদেশ দেন রাজা হিয়েরো। বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের জন্য এটা খুবই সহজ একটি ব্যাপার ছিলো যদি পুরো মুকুটটিকে গলিয়ে স্বর্ণের আয়তন আর ভর নির্ণয় করার সুযোগ থাকতো। যদি এমন হতো, তবে ভরকে আয়তন দ্বারা ভাগ করে ঘণত্ব নির্ণয় করে সেই ঘণত্বের সাথে খাঁটি স্বর্ণের ঘণত্ব মিলিয়ে দেখলেও জানা হয়ে যেত মুকুটটি আসল স্বর্ণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে কি না। তবে রাজার আদেশ ছিলো, "মুকুট গলানো যাবে না!"
না গলিয়ে আর্কিমিডিস কিভাবে এই কাজটি করবে তা ভেবে পাচ্ছিলো না। ভর তো সে নির্ণয় করতে পারবেই, তবে আয়তনও যে প্রয়োজন। কিন্তু স্বর্ণের আয়তন সে এখন কিভাবে নির্ণয় করবে মুকুটটিকে না গলিয়ে?
এই নিয়ে চিন্তা করতে করতেই একদিন গোসলের সময় এক অবাক কান্ড লক্ষ্য করলেন আর্কিমিডিস। দেখলেন তিনি পানিতে নামলে তার শরীর দ্বারা কিছু পরিমাণ পানি অপসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ ব্যাপারটি হচ্ছে, একটি গ্লাসের মুখ পর্যন্ত পানি নিয়ে তাতে যদি একটি বল ডুবান তবে কিছু পানি উপচে বাইরে পরে যাবে। এই বাইরে পরে যাওয়া পানিটুকুই বল কর্তৃক অপসারিত হয়েছে। তেমনি আর্কিমিডিস দেখলেন তার শরীর দ্বারা কিছু পানি অপসারিত হচ্ছে। তখনই এই নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন আর্কিমিডিস।
আর্কিমিডিস আবিষ্কার করলেন যে পরিমান পানি অপসারিত হচ্ছে সেই পানির আয়তন তার শরীরের আয়তনের সমান। ব্যাস আবিষ্কার করে ফেললেন 'আর্কিমিডিসের নীতি'। তিনি দেখলেন কোনো বস্তুকে পানিতে রাখলে যে পরিমাণ পানি অপসারিত হয়, সেই পানির আয়তন আর ওই বস্তুর আয়তন সমান। এখান থেকেই তিনি মুকুটটিকে পানিতে রেখে অপসৃত পানির আয়তন মেপে সেটাকেই স্বর্ণের আয়তন হিসেবে নিয়ে রাজার দেয়া সমস্যার সমাধান করার সাথে আবিষ্কার করলেন নতুন এক নীতি যা আমাদের কাছে পরিচিত আর্কিমিডিসের নীতি নামে।
খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর ঘটনা এটি।
আর্কিমিডিসের নীতি
আর্কিমিডিসের নীতিটি হচ্ছে, "স্থির তরল বা গ্যাসীয় পদার্থে (প্রবাহীতে) কোনো বস্তুকে আংশিক বা সম্পূর্ণ নিমজ্জিত করা হলে বস্তুটি কিছু পরিমাণ ওজন হারায় বলে মনে হয়, এই হারানো ওজন বস্তুর নিমজ্জিত অংশ দ্বারা অপসারিত তরল বা গ্যাসীয় পদার্থের (প্রবাহীর) ওজনের সমান।
আর্কিমিডিসের নীতির ব্যাখ্যা
আর্কিমিডিসের নীতি আসলে কী বুঝায়? নীতিটি একবার দুবার কিংবা তিনবার রিডিং পড়েও হয়তো স্পষ্ট করে বুঝা যায় না। আমরা চেষ্টা করব একটু ভালোভাবে বুঝতে। শুরু করা যাক।
প্রথমে জেনে রাখি যে, আর্কিমিডিসের নীতিটি শুধু তরলের জন্য নয় কিংবা শুধু পানির জন্য নয়, এটি প্রবাহী অর্থাৎ তরল ও গ্যাসীয় পদার্থের জন্য। তরল ও গ্যাসীয় পদার্থে যেকোনো বস্তুকে রাখলেই কেবল আর্কিডিমিডের নীতি বা আর্কিমিডিসের সূত্রটি কার্যকর হবে।
আর্কিমিডিসের সূত্রের প্রথম কথা হচ্ছে, কোনো বস্তুকে কোনো প্রবাহীতে নিমজ্জিত করলে সে বস্তুটি তার আয়তনের সমান আয়তনের প্রবাহী অপসারণ করে। অর্থাৎ, যদি আমি একটি বাতলির পানিতে একটি মোবাইল ফোন ফেলে দিই, তবে ওই মোবাইল ফোনের কারণে যতটুকু পানি অপসারিত হবে, তার আয়তন মোবাইল ফোনের আয়তনের সমান।
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, কোনো বস্তুকে প্রবাহীতে নিমজ্জিত করলে সে কিছুটা ওজন হারায়। এই হারানো ওজন ওই বস্তু কর্তৃক অপসারিত প্রবাহীর ওজনের সমান। অর্থাৎ মোবাইল ফোনটি ফেলে দেয়ার পর সে যতটুকু পানি অপসারণ করবে সেটুকু হবে মোবাইলটির হারানো ওজন।
উদাহারণস্বরূপ, আমরা ভারী কোনো কিছুকে পানিতে রেখে সহজে টেনে নিতে পারি। এর কারণ সে কিছু ওজন হারিয়েছে। এই হারানো ওজনটা হচ্ছে তার দ্বারা অপসৃত পানির ওজনের সমান।
আশা করি আর্কিমিডিসের নীতিটি বুঝাতে পেরেছি।
এবার দেখা যাক, একটি বস্তু কখন পানিতে ডুবে যাবে বা সম্পূর্ন নিমজ্জিত হবে, কখন আংশিক ডুবু ডুবু অবস্থায় (আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায়) ভাসবে এবং কখন পুরোপুরি ভাসবে?
আর্কিমিডিসের নীতি যেসকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় না
বস্তুর ওজন যদি শূন্য হয়, তবে আর্কিমিডিসের এই নীতিটি প্রযোজ্য হয় না। বস্তুর ওজন কখন শূন্য হয়? উদাহারণস্বরূপ বলতে পারি পৃথিবীর কেন্দ্রে এটি প্রয়োগ করা যাবে না। একই সাথে একই প্রয়োগ করা যাবে না পৃথিবীর চতুর্দিকে আবর্তনশীল কৃত্রিম উপগ্রহের উপরও।
নিমজ্জিত হওয়ার শর্ত ও অন্যান্য
১. কোনো বস্তুকে প্রবাহীতে ফেলার পর যদি বস্তু কর্তৃক অপসৃত পানির ওজন বস্তুর ওজন থেকে কম হয় তবে বস্তুটি ডুবে যাবে।
২. যদি অপসৃত পানির ওজন আর বস্তুর ওজন সমান হয় তবে আংশিক নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে।
৩. যদি বেশি হয় তবে ভেসে থাকবে।
আর্কিমিডিসের নীতির গাণিতিক প্রমাণ
চিত্রে একটি পাত্রে পানি রাখা হয়েছে যাতে একটি বস্তু রাখা আছে। এই বস্তুটি অভিকর্ষজ বলের কারণে নিচের দিকে একটি বল প্রয়োগ করবে। এই বলের মান হবে Mg। এখানে `F_o` = `Mg` যেখানে M = বস্তুর ভর এবং g = অভিকর্ষজ ত্বরণ।আমরা জানি, ঘনত্ব, `\rho=\frac mv` বা, `m=\rho v`
`\rho` এর জায়গায় আমরা বস্তুর ক্ষেত্রে D এবং পানি/প্রবাহীর ক্ষেত্রে d ব্যবহার করব।
তাহলে `F_o = Mg` এর থেকে আমরা পাই `F_o = DVg`। এখানে V = বস্তুর আয়তন।
বস্তুটি দ্বারা যে পানি অপসৃত হচ্ছে সেই পানি বস্তুটির উপর একটি উর্ধ্বমুখি বল প্রয়োগ করবে। উপরের মতো করেই সেই বলের মান নির্ণয় করা যাবে। দুই বলের পর লব্ধি ঊর্ধ্বমুখী একটি বল পাওয়া যায়। বলের মান হবে `F_w = dVg` ।
[এখানে v হচ্ছে অপসৃত পানির আয়তন। কিন্তু যেহেতু অপসৃত পানির আয়তন এবং বস্তুর আয়তন সমান তাই, আমরা বস্তুর আয়তন V কেই ব্যবহার করেছি।]
তাহলে এই দুটি বলের কারণে সে কিছু বল হারাচ্ছে, মূলত dVg ই হারানো বলের পরিমাণ । ফলে নিট ওজন হচ্ছে এই দুই বলের বিয়োগফল।
তাহলে নীট ওজন = DVg - dVg = V(D-d) `\times` g
তাহলে পানিতে যদি এখন তার ওজন হয় V(D-d) `\times` g তাহলে ভর হবে V(D-d)। কারণ ভর আর g এর গুনফলই তো ওজন। এখন তাহলে হারানো ভর কতটুকু? মূল ভর থেকে এই অবস্থায় তার যে ভর তা বিয়োগ করলেই তো হারানো ভর পেয়ে যাচ্ছি।
তাহলে হারানো ভর = M - V(D-d) = DV - DV + dV = dV = m [কারণ d=m/v] = অপসৃত পানির ওজন।
অর্থাৎ, বস্তুর হারানো ভর যে অপসৃত পানির ওজনের সমান তার গাণিতিক প্রমাণ আমরা পেয়ে গেলাম।
প্লবতা বল
আর্কিমিডিসের এই নীতি থেকেই প্লবতার ধারণা এসেছে। প্লবতা বল হচ্ছে অপসৃত প্রবাহী কর্তৃক বস্তুর উপর প্রদানকৃত বল বা `F_w = \rhovg` যেখানে `\rho` = প্রবাহীর ঘনত্ব, v = অপসৃত পানির আয়তন = বস্তুর আয়তন এবং g = অভিকর্ষজ ত্বরণ।
[কোনো বস্তুকে পানিতে নিমজ্জিত করলে বস্তুর উপর পানি কর্তৃক যে ঊর্ধ্বমুখী লব্ধি বল ক্রিয়া করে তাকে প্লবতা বল বলে।]
ল্যাবরেটরিতে আর্কিমিডিসের নীতির ব্যবহারিক প্রমাণ
ল্যাবরেটরিতে আমরা কিভাবে আর্কিমিডিসের নীতিটির প্রমাণ করব? ল্যাবে এর প্রমাণ করার জন্য আমাদের প্রয়োজন যেসব উপকরণ আগে সেগুলোর তালিকে করে নেয়া যাক।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- পার্শ্বনলযুক্ত বিকার
- একটি ছোট বিকার
- বাটখারা
- স্প্রিং তুলা যন্ত্র
কার্যপদ্ধতি
পার্শ্বনলযুক্ত বিকারের মধ্যে কিছু পানি নিই। পানির মাধ্যমে বিকারটি সম্পূর্ণ করা হলো একদম নলের মুখ পর্যন্ত। পার্শ্বনলটির মুখে একটি ছোট বিকার রাখি। প্রমাণ ওজনের একটি বাটখারাকে একটি বাটখারাকে একটি স্প্রিং তুলা যন্ত্রের হুক থেকে দড়ির সাহায্যে প্রথম বিকারে ঝুলিয়ে দিয়ে পানিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত অবস্থায় বিকারে এমনভাবে নিমজ্জিত করি যেন তা বিকারের গায়ে বা তলদেশে স্পর্ষ না করে। এর ফলে কিছু পরিমাণ পানি ছোট বিকারটিতে জমা হলো। এই অবস্থায় স্প্রিং তুলা যন্ত্রের মাধ্যমে বাটখারার ওজন এবং ছোট বিকারে সংগৃহীত পানির ওজনের পাঠ নেয়া হলো।
পর্যবেক্ষণ
পর্যবেক্ষণ করলে দেখা গেলো যে, পানিতে নিমজ্জিত বাটখারার ওজন তার প্রকৃত ওজনের থেকে কিছুটা কম। আর যতটুকু ওজন কম, ঠিক ততটুকুই ছোট বিকারে জমা হওয়া পানির ওজন।
সিদ্ধান্ত
সিদ্ধান্ত নেয়ার আর কী বাকি আছে? এতোক্ষণ ধরে তো এক কথাই বলে যাচ্ছি!
আর্কিমিডিসের নীতির সাহায্যে কোনো কঠিন বস্তুর আয়তন নির্ণয়
আর্কিমিডিসের নীতির সাহায্যে কঠিন বস্তুর আয়তন কিভাবে নির্ণয় করব? একদমই সহজ। এতোক্ষণ যাবৎ মন দিয়ে পড়ে থাকলে এই উত্তর সহজেই দিতে পারার কথা।
কোনো কঠিন বস্তুকে পানিতে নিমজ্জিত করলে যেই পরিমাণ পানি অপসৃত হয়, সেই পানির আয়তনই ওই বস্তুর আয়তন। ব্যাস!
আর্কিমিডিসের নীতির সাহায্যে কোনো কঠিন বস্তুর ঘনত্ব নির্ণয়
আয়তন নির্ণয় তো করে ফেললাম। তাহলে এখন ভর নির্ণয় করি। সরাসরি ওজন করলেই ভর পাবো। ভরকে আয়তন দিয়ে ভাগ করলেই তো ঘনত্ব পেয়ে যাব। কারণ, `\rho=\frac mv`।
আর্কিমিডিসের নীতির একটি বাস্তব উদাহারণ
আর্কিমিডিসের নীতির কয়েকটি উদাহারণ দেয়া যাক। সহজ হবে যদি একেবারে প্লবতার উদাহারণই দেয়া হয় তবে।
১. একখন্ড লোহা পানিতে ডুবে গেলেও লোহার তৈরি জাহাজ ভাসে কেন?
এর উত্তর কিন্তু আর্কিমিডিসের নীতিই।
এছাড়া মানুষের পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার পর আবার ভেসে ওঠা, নৌপথে দুর্ঘটনা ইত্যাদির পেছনেও আর্কিমিডিসের নীতি কাজ করে।
আর্কিমিডিসের নীতি সম্পর্কিত একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান
আলাদা কোনো পোস্টে আর্কিমিডিসের নীতি নিয়ে অনেকগুলো গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে দেয়ার চেষ্টা করব। এই লেখায় শুধু ধারণা পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যে একটি উল্লেখ করছি।
প্রশ্ন
বাতাসে একটি মুকুটের ভর 10 kg। পানিতে ডুবালে এর ভর হয় 9.4 kg। তাহলে মুকুটটির ঘনত্ব কত?
সমাধান
প্রথমেই আমরা হারানো ওজন নির্ণয় করব। কারণ মুকুটটির হারানো ভরই অপসৃত পানির ভর। যেহেতু আমরা পানির ঘনত্ব জানি তাই অপসৃত পানির ভর থেকে আমরা সহজেই অপসৃত পানির আয়তন নির্ণয় করতে পারবো। সেই আয়তনই হবে আবার মুকুটটির আয়তন। এই আয়তন আর মূল ভর ব্যবহার করে আমরা মুকুটটির ঘনত্ব নির্ণয় করতে পারবো।
মাথায় ঢুকলো না?
ধাপে ধাপে করা যাক।
মুকুটটির হারানো ভর = (10 - 9.4) = 0.6 kg = অপসৃত পানির ভর
আমরা জানি,
`m_w=\rho_w \times V_w`
বা, `0.6 kg = \rho_w \times V_w`
বা, `V_w = \frac {0.6}{1000}` [পানির ঘনত্ব, `\rho = 1000 kgm^-3`।]
অপসৃত পানির আয়তন, `V_w = \frac {0.6}{1000} =` বস্তুর আয়তন।
সুতরাং, `\rho = \frac {10}{6 \times 10^-4} = 16666 kgm^-3`।
এই লেখা এখানেই শেষ! কোনো প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন ফেসবুক পেজে। সাথে থাকায় ধন্যবাদ।
আরও দেখুন: