১৫ই নভেম্বর ১৯৮৯ থেকে ৮ আগস্ট ১৯৯০ পর্যন্ত শচীন মোট টেস্ট খেলেছিলেন ৮টি। এই ৮ ম্যাচের ১২ ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে শচীন টেন্ডুলকার ৩০.৭৫ গড়ে মোট রান করেন ৩৬৯। এই ৩৬৯ রান সংগ্রহ করতে গিয়ে শচীন অর্ধশতক করেছিলেন ৩টি, সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিলো ৮৮ রানের। প্রথম ১২ ইনিংসে ছিলো না কোনো শতক। ক্যারিয়ারের শেষবেলায় শচীনের নামের পাশে যে ১০০টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি ছিলো তার শুরুটা হয়েছিলো শচীনের ক্যারিয়ারের ৯ম টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে।
৯ আগস্ট ১৯৯০; ম্যানচেস্টারে ৩ ম্যাচ সিরিজের ২য় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং এর সিদ্ধান্ত স্বাগতিক ইংল্যান্ডের। গ্রাহাম গুচ, মাইক আথারটন আর রবিন স্মিথের সেঞ্চুরিতে ৫১৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলে ইংলিশরা। জবাবে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ১৭৯, সঞ্জয় মাঞ্জেকারের ৯৩ আর শচীনের ৬৮ রানে ভর করে ৪৩২ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত। পরের ইনিংসে ইংল্যান্ড ৪ উইকেট হারিয়ে ৩২০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করলে শচীনদের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০৮।
৪০৮ রানের লক্ষ্যে ৩৫ রানেই নেই ভারতের দুই উইকেট, ১০৯ রানে আরও দুটি। আজহারউদ্দিন আর কপিল দেবও ফিরলো দ্রুত। ১৮৩ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের অপেক্ষাতেই তখন ছিলো ভারত। কিন্তু এক প্রান্ত ধরে ছিলো শচীন রমেশ টেন্ডুলকার। আলাদা এক ক্রিকেট সাম্রাজ্য গড়ার জন্য এরকম একটি প্লটকেই বেছে নিলেন দ্যা মাস্টার ব্লাস্টার। মনোজ প্রভাকরকে সাথে নিয়ে গড়লেন ১৬০ রানের পার্টনারশিপ। মনোজের সংগ্রহ ছিলো ৬৭ আর শচীনের ওই ইনিংসে মোট রান ছিলো শতক পার করে ১১৯। দুজনের দৃঢ়চেতা ব্যাটিং-এ ভর করে হার এড়াতে সক্ষম হয়ে ভারত। সাথে শচীন করে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। মুশতাক আহমেদের পর সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট শতকের মালিক বনে যান তিনি। ৫১টি টেস্ট শতকের শুরুটা সেদিনই, সেভাবেই; দলের বিপদের সময় দলের হাল ধরে, দলকে বাঁচিয়ে। তখন থেকেই দলকে বাঁচিয়ে গেছেন অনেকবার, দলের সেরা ব্যাটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভারতের সেরা ব্যাটার হিসেবে।
প্রথম শতক করে ম্যাচ ড্র করানোর পর শচীন। (Image Source: Twitter/BCCI) |
সর্বকালের সেরা ব্যাটার কে? উত্তরে স্যার ডন ব্রাডম্যানের নামটা অধিক উচ্চারিত হবে। তবে ব্রায়ান লারা কিংবা শচীন টেন্ডুলকারের নামটাও অনুচ্চারিত থাকবে না। তবে লারা বা অন্যদের বাদ দিয়ে ডন ব্রাডম্যানের সাথে শচীনের একটা মিল খুঁজে দেখাই।
শচীন টেন্ডুলকার তার প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন কবে? উত্তরটা ১৪ আগস্ট ১৯৯০। তার ঠিক ৪২ বছর পূর্বে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন স্যার ডন ব্রাডম্যান, ১৪ আগস্ট ১৯৪৮। কী মিল! তাই না? ব্রাডম্যানের শেষ থেকেই যেন শচীনের শুরু। আরেকটু তথ্য দিই। টেস্ট ক্রিকেটের নতুন সেনসেশন যে মারনাস ল্যাবুশেন, সেই ল্যাবুশেন স্মিথের কনকাশন সাবসটিটিউট হিসেবে যে টেস্টে নেমেছিলো, সেই টেস্টটিও শুরু হয়েছিলো ১৪ আগস্টেই। ১৪ আগস্ট যেন ক্রিকেটের জন্য বিশেষ কোনো দিন!