এইতো কেবল ৫ বছর হলো স্কুল ক্রিকেটের মধ্য দিয়ে শচীন প্রফেশনাল ক্রিকেট খেলতে শুরু করলো। ৫ বছর হতে না হতেই শচীনের ডাক আসলো জাতীয় দলে; পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানেরই বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ।
শচীন মূলত ব্যাটার, সামলাতে হবে বোলারদের। সে সময়কার পাকিস্তান দলের বোলারদের নাম বলুনতো দেখি। ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, আকিব জাভেদ, মুশতাক আহমেদ, আবদুল কাদিররা সে সময়ের পাকিস্তান দলের বোলার। শচীনের সাথে ওই ম্যাচ দিয়েই টেস্ট অভিষেক আরেক কিংবদন্তী ওয়াকার ইউনিসেরও। এমন বাঘা বাঘা সব বোলারদের মোকাবেলা করবে ১৬ বছরের এক কিশোর? কয়জনই বা বিশ্বাস করে নিতে পেরেছিলো এটা?
স্কোয়াডে শচীনের অন্তর্ভূক্তি দেখে অনেকেই অনেক কিছু আন্দাজ করেছিলো। কেউ হয়তো ভেবেছিলো পরের ওডিআই সিরিজে মাঠে নামাতে পারে শচীনকে, কেউবা আবার বলেছিলো শুধুই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের হাবভাব বুঝাতেই দলের সাথে রাখা হয়েছে শচীনকে। তবে সেই টেস্ট সিরিজে শচীনকে যে মাঠে নামতে হবে না সেটা প্রায় সবারই বিশ্বাস ছিলো।
ওই সিরিজের সময়টাতে বিসিসিআইয়ের সাথে প্লেয়ারদের নানা কারণেই ঝামেলা হচ্ছিলো; দলের একেবারে নতুন ক্রিকেটার হিসেবে শচীন অবশ্য এসব থেকে বাইরেই ছিলো। এর মধ্যেই একটি প্রস্তুতি ম্যাচে শচীন রান করলেন ৪৭। ম্যাচের আগের দিন রাতে শচীন জানতে পারলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন তিনি।
১৫ নভেম্বর ১৯৮৯: শচীনের টেস্ট অভিষেক
কপিল দেবের শততম টেস্টে করাচীতে শচীনের অভিষেক। অভিষেককালে শচীনের বয়স ১৬ বছর ২২৩ দিন। টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিং-এ পাঠালো ভারত। পাকিস্তান ১০ উইকেট হারিয়ে রান তুললো ৪০৯। জবাবে ভারত ৪১ রান তুলতেই হারিয়ে বসেছে ৪ উইকেট। ৬ নাম্বার ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামলেন শচীন। মাঠে ছিলেন ২৮ মিনিট, খেলেছেন ২৪ বল, রান করেছেন ১৫ যেখানে বাউন্ডারি ছিলো ২টি। এই ২৪ বলের বেশিরভাগ বলই শচীন ঠিকভাবে ব্যাটেই লাগাতে পারেনি। এর মাঝে আবার আরেক অভিষিক্ত ওয়াকার ইউনিসের বলে নাকে আঘাত পান শচীন, ঝরে রক্ত, পরের বলেই হাকান চার। তবে ফিরেও যান এই ইউনিসের বলে বোল্ড হয়েই। সে ম্যাচে আর ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পাননি শচীন। বিশাল এক সাম্রাজ্য গড়ার শুরুটা মনমতো হয়নি আসলেই, তবে সাম্রাজ্য ঠিকই গড়েছিলো ধীরে ধীরে, ক্যারিয়ার শেষে শচীন যে বিশাল এক সাম্রাজ্যের মালিক।
ওভিষেক ম্যাচে মোহাম্মাদ আজহারউদ্দিনের সাথে ১৬ বছরের শচীন। (Image Source: Getty Images) |
এই বাঘা বাঘা বোলারদের বিপক্ষেই শচীন নিজের জাত চেনান পরের টেস্টেই। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেই করেন ৫৯ রান। ওই সিরিজের শেষ টেস্টে নিজেদের ২য় ইনিংসে ৫৭ রান করে আউট হোন শচীন। পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৬ বছরের কিশোরের দুটি অর্ধশতক কম কিসে? ওই সিরিজের ৪ টেস্টের ৬ ইনিংসে ব্যাট করে শচীনের সংগ্রহ ছিলো ৩৫.৮৩ গড়ে মোট ২১৫ রান; বাউন্ডারি থেকেই ৯২।
১৮ ডিসেম্বর ১৯৮৯: শচীনের ওডিআই অভিষেক
টেস্ট সিরিজের পরের ওডিআই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের হয়ে রঙিন পোশাকেও অভিষেক হয় শচীন রমেশ টেন্ডুলকারের। তবে ওয়াকার ইউনিসের বলে ওয়াসিম আকরামের হাতে ক্যাচ দিয়ে নিজের ২য় বলেই রানের খাতা শূন্য রেখে আউট হন শচীন।