রক্ত সম্পর্কে কিছু মনে থাকে না? কিন্তু কিছু জিনিশ তো মনে রাখতেই হবে! এটা জানা যেমন জরুরি তেমনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এখান থেকে HSC এবং Admission Test এ প্রশ্ন আসেই। এমনকি বিসিএস ও চাকরির পরীক্ষাতেও এখান থেকে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।
এই অধ্যায়টি অনেকের ক্ষেত্রে কঠিন মনে হতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যদি একটু চেষ্টা করো এবং মূল বিষয় গুলোকে মনে রাখার টেকনিক জানো তবে খুব সহজেই এ অধ্যায় থেকে করা যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে। নিম্নে আমরা এই অধ্যায়টিকে শর্ট নোট আকারে তুলে ধরছি যাতে করে খুব সহজেই তোমরা এই অধ্যায়ের কি পয়েন্ট গুলোকে মনে রাখতে পারো।
রক্ত কি?
মানবদেহে রক্তনালীসমূহের ভিতর দিয়ে নিরন্তন প্রবহমান লাল বর্ণের অসচ্ছ,সামান্য ক্ষারীয়, চটচটে, লবনাক্ত প্রকৃতির তরল যোজক টিস্যুকে রক্ত বলে।
রক্ত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- পরিমাণঃ ৫-৬ লিটার (পুর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষের দেহে)
- দৈহিক ওজনেরঃ ৮%
- PH: ৭.৩৫-৭.৪৫
- তাপমাত্রাঃ ৩৬-৩৮°
- ক্ষারীয়
- আপেক্ষিক গুরুত্বঃ ১.০৬৫ (পানির চেয়ে বেশি)
- স্বাদঃ নোনতা
রক্তের উপাদান
- রক্তরস/প্লাজমা (৫৫%)
- রক্তকণিকা (৪৫%)
রক্তরস হচ্ছে রক্তের হাল্কা হলুদ বর্নের তরল অংশ। ররক্তরসে ভাসমান বিভিন্ন ধরনের কোষকে রক্তকণিকা বলে।
রক্ত কণিকা
রক্ত কণিকা ৩ প্রকার। এগুলো হল:
২) শ্বেত রক্ত কণিকা/ লিউকোসাইট
৩) অনুচক্রিকা / থ্রম্বোসাইট
লোহিত রক্ত কণিকা
লোহিত রক্তকণিকা বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো এই অংশ থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বহুনির্বাচনি প্রশ্ন এবং জ্ঞানমূলক প্রশ্ন হয়ে থাকে
মানবদেহে প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা
- ভ্রুনদেহেঃ ৮০-৯০ লাখ
- শিশুরঃ ৬০-৭০ লাখ
- পূর্ণবয়স্ক পুরুষেঃ ৫০ লাখ
- পূর্ণবয়স্ক স্ত্রীদেহেঃ ৪৫ লাখ
- ৫০ লাখের চেয়ে ২৫% কম হলে রক্তস্বল্পতা (Anaemia)
- ৬৫ লাখের চেয়ে বেশি হলে পলিসাইথেমিয়া বলে
লোহিত রক্ত কণিকার (RBC) বৈশিষ্ট্য
- আকার: গোল,দ্বিঅবতল
- হিমোগ্লোবিন: আছে
- নিউক্লিয়াস নেই
- বর্ন: লাল
শ্বেত রক্ত কণিকা
শ্বেত রক্ত কণিকার বৈশিষ্ট্য
- আকারঃ অনিয়তাকার
- হিমোগ্লোবিনঃ নেই
- নিউক্লিয়াসঃ আছে
- বর্ণহীন
প্লাজমা প্রোটিন এর নাম মনে রাখার টেকনিক
প্লাজমা প্রোটিন গুলোর নাম মনে রাখার জন্য আমরা একটু শর্ট টেকনিক ব্যবহার করতে পারি। এক্ষেত্রে আমাদেরকে মনে রাখতে হবে প্লাজমা প্রোটিন গুলোর নাম "GPA 5" দ্বারা নির্দেশ করা যায় অর্থাৎ এই ক্ষেত্রে:
G- গ্লোবিউলিন
P- প্রোথ্রম্বিন
A- অ্যালবুমিন
5 (Five) - ফাইব্রিনোজেন
রক্ত কেন লাল?
লোহিত রক্ত কনিকায় হিমোগ্লোবিন আছে। প্রতিটি হিমোগ্লোবিন অণু হিম (Heme) নামক লৌহ ধারন কারী রঞ্জক এবং গ্লোবিন (Globin) নামক প্রোটিন সমন্বয়ে গঠিত। হিমোগ্লোবিন এর ৪ টি পলিপেপটাইড চেইনের সাথে ১ টি হিম গ্রুপ যুক্ত থাকে। হিম গ্রুপের জন্যই রক্ত লাল হয়। প্রতি ১০০ মিলিলিটার রক্তে ১৬ গ্রাম হিমোগ্লোবিন থাকে।
জ্ঞানমূলক ও বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
- ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবানু ধ্বংস করে।
- প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে সংখ্যাঃ ৫-৮ হাজার
- লোহিত ও শ্বেত রক্ত কনিকার অনুপাত ৭০০ঃ১
- বেসোফিল 'হিস্টামিন' নিসঃরন করে এবং 'হেপারিন' নিসঃরন করে
- হেপারিন রক্তনালির মাঝে রক্ত জমাট বাধতে বাধা প্রদান করে।
শ্বেত রক্তকণিকাকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
১)দানাবিহীন /অ্যাগ্র্যানুলোসাইট
ক.লিম্ফোসাইট
খ.মনোসাইট
২)দানাদার / গ্র্যানুলোসাইট
ক. নিউট্রোফিল
খ.ইওসিনোফিল
গ.বেসোফিল
ইংরেজি Term টাই মনে রাখবে৷ বাংলা Term গুলা মনে রাখলেও ফিউচার এ English টাই লাগবে। মনে রাখবে মেইন বই এর কোনো বিকল্প নেই। তথ্য নেয়া হয়েছে গাজী আজমল স্যারের বই থেকে। সবাই ভালো থাকো সুস্থ থাকো, আল্লাহ হাফেজ!
-মোঃ মেহেদী হাসান নিঝুম