ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি কাকে বলে?
ডেটা বা উপাত্ত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে প্রেরন করাকে ডেটা ট্রান্সমিশন বলে। কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তর হয় সিগন্যাল বিটের মাধ্যমে। এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা ট্রান্সমিশন হওয়ার সময় অবশ্যই উভয় কম্পিউটারের মধ্যে সিগন্যাল বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে সক্ষম হতে হয়। বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে প্রাপক কম্পিউটার সে সিগন্যাল গ্রহণ করতে পারে না। এই সিগনাল পাঠানোর সময় বিভিন্ন বিটের মধ্যে সমন্বয়ের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিকে বলা হয় বিট সিনক্রোনাইজেশন।
ডেটা ট্রান্সমিশন পদ্ধতি কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, এগুলো হলো:
- অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission)
- সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission)
- আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Isochronous Transmission)
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন কাকে বলে?
যে ট্রান্সমিশন সিস্টেমে প্রেরক থেকে প্রাপকে ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ডেটা ট্রান্সমিট হয় তাকে অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলে। এই পদ্ধতিতে স্টার্ট বিট এর ক্যারেক্টার ডাটাকে ট্রান্সমিশনের পূর্বে তার সম্মুখে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি বা দুটি স্টপ বিট যুক্ত করে প্রতিটি ক্যারেক্টার 10 অথবা 11 বিটের ডেটায় পরিণত করা হয়ে থাকে তারপরে ট্রান্সমিশন করা হয়। কম্পিউটার কিবোর্ড থেকে সিপিইউ এর মধ্যে যে ডেটা ট্রান্সমিশন হয়ে থাকে তা মূলত অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন এর অন্যতম উদাহরণ।
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের বৈশিষ্ট্য
- কোন প্রাইমারি স্টোরেজের প্রয়োজন হয় না
- যেকোনো সময়ে প্রেরক ডাটা পাঠাতে পারে এবং প্রাপক তা গ্রহণ করতে পারে
- স্বল্প দূরত্বে ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি উপযোগী
- স্থাপন খরচ খুব কম
- নির্ভরযোগ্যতা কম
- দক্ষতা ও গতি কম
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন কাকে বলে?
যে ট্রান্সমিশন সিস্টেমে ডেটাকে ব্লক বা প্যাকেজ আকারে ট্রান্সমিট করা হয়ে থাকে তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন বলা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে ডেটাকে প্রথমে প্রাইমারি স্টোরেজে সংরক্ষণ করা হয় তারপরে ব্লক আকারে ভাগ করে প্রতিবার একটি করে ব্লক ট্রান্সমিট করা হয়।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন এর বৈশিষ্ট্য:
- গতি অনেক বেশি
- দক্ষতা তুলনামূলকভাবে বেশি
- নির্ভরযোগ্যতা বেশি
- সময় খুব কম প্রয়োজন হয়
- প্রাইমারি স্টোরেজের প্রয়োজন হয়
- সার্কিট এর গঠন বেশ জটিল
- স্থাপন খরচ বেশি
আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন কাকে বলে?
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন সিস্টেমের উন্নত সংস্করণ যেখানে সিস্টেমে প্রেরক ও প্রাপক স্টেশনের মধ্যে ট্রান্সমিশন ডিলে সর্বনিম্ন হয় তাকে আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন সিস্টেম বলে। এই ট্রান্সমিশন সিস্টেমে সবথেকে কম সময়ের মধ্যে সবথেকে বেশি পরিমাণে ডেটা ট্রান্সমিশন করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে।
অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন এর বৈশিষ্ট্য:
- সময় তুলনামূলকভাবে অনেক কম প্রয়োজন হয়
- প্রাইমারি স্টোরেজের প্রয়োজন হয়
- সার্কিট এর গঠন বেশ জটিল
- খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি
- নির্ভরযোগ্যতা অনেক বেশি
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ও সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন এর মধ্যে পার্থক্য
নিচের অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন ও সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের মধ্যে বৈশিষ্ট্যমূলক পার্থক্যগুলো আলোচনা করা হলো। নিম্নে দেওয়া টেবিলের মধ্যে মূলত পার্থক্যগুলো আমরা দেখানোর চেষ্টা করেছি।
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Asynchronous Transmission) | সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন (Synchronous Transmission) |
---|---|
ডেটা ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিশন হয় | ডেটা ব্লক বা প্যাকেট আকারের ট্রান্সমিশন হয় |
ট্রান্সমিশন গতি কম | ট্রান্সমিশন গতি বেশি |
সময় বেশি লাগে | সময় কম লাগে |
ট্রান্সমিশন দক্ষতা কম | ট্রান্সমিশন দক্ষতা বেশি |
Start Bit, Stop Bit দরকার হয় | Start Bit, Stop Bit দরকার হয় না |
স্থাপন খরচ কম | স্থাপন খরচ বেশি |
প্রাইমারি স্টোরেজের প্রয়োজন হয় না | প্রাইমারি স্টোরেজের প্রয়োজন হয় |
এই টপিকগুলো একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দ্বিতীয় অধ্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কিছু টপিক। এগুলোকে অনুশীলন করাটা একজন ভাল ছাত্রের জন্য অনেকটা বেশি প্রয়োজনীয়। এজন্য অবশ্যই এই অধ্যায় পুরোপুরি অনুশীলন করার ক্ষেত্রে এই টপিকগুলোতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।