একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কেননা পরবর্তীতে জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের গুরুত্ব ভর্তি পরীক্ষা ও অন্যান্য পরীক্ষাগুলোতে অনেক বেশি। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নিচে আমরা HSC biology 2nd paper এর অধ্যায়ভিত্তিকভাবে সকল অধ্যায়ের সারসংক্ষেপ দিয়ে দিয়েছি যাতে করে আপনার খুব সহজেই তা অনুশীলন করতে পারেন এবং মনে রাখতে পারেন। এবং শেষে আমরা PDF যুক্ত করে দিয়েছি যাতে করে Download করে নিয়ে অফলাইনেও আপনারা অনুশীলন করতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, উক্ত সারসংক্ষেপ গুলো গাজী আজমল ও গাজী আসমত স্যার এর বই থেকে নেওয়া হয়েছে অর্থাৎ গাজী পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বই থেকে নেয়া হয়েছে। উক্ত বইটি সংগ্রহে রাখার মত। এই বই থেকে অনেক বেশি পরিমাণে প্রশ্ন কমন পড়ে থাকে। যেহেতু বইটি খুব ভালো করে লেখা হয়েছে তাই যে কোন শিক্ষার্থী বইটি থেকে সবথেকে ভালো ভাবে সকল টপিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। বাজারে অন্য বইগুলোর মধ্যে এই বইটি শেরা।
প্রথম অধ্যায়: প্রাণীর বিভিন্নতা ও শ্রেণিবিন্যাস
১) পৃথিবীর সমস্ত জলচর, স্থলচর ও খেচর প্রাণিদের মধ্যে যে জিনগত, প্রজাতিগত ও বাস্তুসংস্থানগত ভিন্নতা দেখা যায় সেটিই হচ্ছে বিভিন্নতা বা প্রাণিবৈচিত্র্য।
২) শ্রেণিবিন্যাসে ব্যবহৃত প্রতিটি একক ট্যাক্সন বলে।
৩) নিষেকের ফলে সৃষ্ট জাইগােট ক্রমাগত বিভক্ত হয়ে পরিস্ফুটনের মাধ্যমে ভ্রণ সৃষ্টি করে। ভূণের যে সব কোষন্তরথেকে পরিণত প্রাণীর বিভিন্ন টিসযু ও অঙ্গ পরিস্ফুটিত হয় সেগুলােকে ভূণন্তর বলে।
৪) প্রতিসাম্য বলতে প্রাণিদেহের মধ্যরেখীয় তলের দুপাশে সদৃশ বা সমান আকার-আকৃতিবিশিষ্ট অংশের অবস্থানকে বুঝায়।
৫) কোনাে প্রাণীর দেহ যদি অনুলম্ব অক্ষে বরাবর একই ধরনের খণ্ডকের ক্রমিক পুনরাবৃত্তির ফলে গঠিত হয় তখন এ অবস্থাকে বলে খণ্ডকায়ন বা মেটামেরিজম।
৬) সিলােম হচ্ছে এমন কোনাে দেহ গহবর যা মেসােডার্ম থেকে উদ্ভূত এবং পেরিটোনিয়াম নামে মেসােডার্মাল কোষন্তরে আবৃত।
৭) প্রাণিজগতের পর্বগুলােকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে- প্রধান পর্ব ও গৌণ পর্ব। প্রাণিজগতে নয়টি প্রধান পর্ব রয়েছে।
৮) পরিফেরা পর্বভুক্ত প্রাণিদের দেহপ্রাচীরে বিশেষ কতকগুলাে ছিদ্র পাওয় যায়f। এদের নাম অস্টিয়া।
৯) অ্যানিলিড প্রাণিদের পা্শ্বীয় চ্যাপ্টা, প্রসারিত চলন অঙ্গের নাম প্যারাপােডিয়া।
দ্বিতীয় অধ্যায়: প্রাণীর পরিচিতি
১) অর্থনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ চাষযোগ্য যে সমস্ত অস্থিবিশিষ্ট মাছ মিঠাপানিতে বাস করে, মাথা আঁইশবিহীন এবং যাদের অতিরিক্ত শ্বসন অঙ্গ থাকে না তাদের কার্প মাছ বলে।
২) যে শিরারসমূহের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন সিস্টেম বা তন্ত্র হতে অক্সিজেনবিহীন রক্ত হৎপিণ্ডে ফিরে আসে তাকে সিস্টেমিক শিরাতন্ত্র বলে।
৩) কৈশিক নালিকা হতে উৎপন্ন হয়ে অক্সিজেনবিহীন রক্ত নিয়ে হৎপিণ্ডে যাবার পথে যে সকল শিরা অন্য কোনা অঙ্গে প্রবেশ করে আবার কৈশিকনালিতে পরিণত হয়, তাদেরকে পাের্টাল শিরাতন্ত্র বলে ।
৪) রুই মাছ বাংলাদেশের স্বাদুপানির চাষযােগ্য অত্যন্ত সাধারণ ও সুস্বাদু মাছ।
৫) রুই মাছের আকৃতিকে স্ট্রিমলাইন্ড বলে কারণ এতে চলনের সময় পানির ভিতর গতি বাধা প্রাপ্ত হয় না।
৬) রুই মাছের মাথার পেছন দিকে দুপাশে ফুলকা প্রকোষ্ঠকে ঢেকে কানকো থাকে।
৭) রুই মাছের আইশ সাইক্লয়েড ধরনের। এগুলো পাতলা, গোল ও রূপালী চকচকে।
৮) রুই মাছের হৎপিন্ড দুই প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট-একটি অ্যাট্রিয়াম ও একটি ভেন্ট্রিকল। কেবল কার্বন ডাই অক্সাইড-সমৃদ্ধ রক্ত বহন করে বলে মাছের হৃৎপিন্ডকে শিরা হৎপিন্ড বলে।
৯) অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী ব্রাঙ্কিয়াল ধর্মনি নিয়ে রুই মাছের ধর্মনিত্ত্র গঠিত।
১০) চারজোড়া ফুলকা রুই মাছের শ্বসন অঙ্গ।
১১) রুই মাছের মেরুদন্ডের নিচে এবং পৌষ্টিকনালির উপরে অবস্থিত যোজক টিস্যুতে গঠিত পাতলা প্রাচীর বিশিষ্ট থলিটির নাম বায়ুথলি।
আরও পড়ুন: HSC Botany: জীব প্রযুক্তি Note
তৃতীয় অধ্যায়: পরিপাক ও শোষণ
১) যে জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গৃহীত অদ্রবণীয়, বৃহত্তর জটিল খাদ্যাণুগুলাে হরমােনের প্রভাবে ও এনজাইমের সহায়তায় দ্রবণীয়, ক্ষুদ্রতর, সরল ও তরল খাদ্যাণুতে পরিণত হয়ে দেহে শােষণ ও আত্তীকরণের উপযাোগী হয়ে উঠে তার নামই পরিপাক।
২) মানুষের মুখগহবরেই খাদ্য পরিপাক শুরু হয়। লালারসে অবস্থিত টায়ালিন এনজাইম কার্বোহাইড্রেটের পরিপাক শুরু করে।
৩) পাকস্থলিতে খাদ্যবস্তু সাময়িকভাবে জমা থাকা ছাড়াও গ্যাস্ট্রিক জুসের এনজাইম প্রােটিন ও লিপিড এর পরিপাক ঘটায়।
৪) ক্ষুদ্রান্ত্রে খাদ্যবস্তুর পরিপাক সম্পূর্ণ হয় এবং এর প্রাচীরের মাধ্যমে খাদ্যসার রক্তবাহিকায় ও লসিকাবাহিকায় শােষিত হয়।
৫) যকৃত দেহের বৃহত্তম গ্রন্থি। পরিপাকে অংশগ্রহণ ছাড়াও অঙ্গটি দেহে বিপাক ও সঞ্চয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
৬) আদর্শ দৈহিক ওজনের ২০% বা তারও বেশি পরিমাণ মেদ দেহে সঞ্চিত হলে তাকে স্থুলতা বলে।
চতুর্থ অধ্যায়: রক্ত ও সঞ্চালন
১) রক্ত হচ্ছে প্লাজমা ও এতে ভাসমান বিভিন্ন কোষীয় উপাদানে গঠিত জটিল তরল যােজক টিস্য।
২) শ্বেত কণিকা ফ্যাগােসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস করে।
৩) অণুচক্রিকাগুলাে ক্ষতস্থানে রক্ত তঞ্চন ঘটায় এবং হিমােস্ট্যাটিক প্লাগ গঠন করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।
৪) মানব হৎপিও ৪ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট-২টি অ্যাট্রিয়াম ও ২টি ভেন্ট্রিকল।
৫) SAN ডান অ্যাট্রিয়ামের প্রাচীরে, ডান অ্যাট্রিয়াম ও সুপরিয়র ভেনাক্যাভার ছিদ্র্রের সংযােগস্থলে অবস্থিত এর স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কিছু স্নায়ুপ্রান্তসহ আল্প কিছু সংখ্যক হৎপেশি তত্ত্ব নিয়ে গঠিত।
৬) AV বান্ডেলের মাধ্যমে হৎ উদ্দীপনার ঢেউ অ্যাট্রিয়া থেকে ভেন্ট্রিকলে প্রবাহিত হয়।
৭) হৎপেশি যখন O,-সমৃদ্ধ পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ পায়না তখন বুক নিষ্পেষিত হচ্ছে বা দম বন্ধ হয়ে আসছে এমন মারাত্মক অস্বস্তি অনুভূত হলে সে ধরনের বুক ব্যাথাকে অ্যানজাইনা বলে।
৮) পর্যাপ্ত 0,-সমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহের অভাবে কার্ডিয়াক পেশির ধ্বংস বা মরে যাওয়াকে হার্ট অ্যাটাক বলে।
৯) হৎপি্ডের ডান অ্যাট্রিয়াম-প্রাচীরের উপর দিকে অবস্থিত, বিশেষায়িত কার্ডিয়াক গুচ্ছে গঠিত ও স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রিত একটি ছোট অংশ যা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ প্রবাহ ছড়িয়ে দিয়ে হৎস্পন্দন সৃষ্টি করে এবং স্পন্দনের ছন্দময়তা বজায় রাখে তার নাম পেসমেকার।
পঞ্চম অধ্যায়: শ্বসন ও শ্বাসক্রিয়া
১) একজোড়া গােলাপী বর্ণের স্পঞ্জের মতাে বায়ুপূর্ণ অঙ্গ অর্থাৎ ফুসফুস হচ্ছে মানুষের শ্বসন অঙ্গ।
২) প্রতিটি ফুসফুসে বুদবুদের মতাে দেখতে স্কোয়ামাস এপিথেলিয়াম কোষে গঠিত ও কৈশিকজালিকাসমৃদ্ধ গ্যাসীয় বিনিময় তলকে অ্যালডিওলাস বলে।
৩) প্রশ্বাস ও নিঃশ্বাস বহিঃশ্বসনের দুটি পর্যায়।
৪) অন্তঃশ্বসনের ফলে কোষে শক্তি উৎপন্ন হয়।
৫) মাথার খুলিতে মুখমণ্ডলীয় অংশে নাসাগহ্বরের দুপাশে অবস্থিত বায়ুপূর্ণ চারজোড়া বিশেষ গহবর সাইনাস বলে।
৬) ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণে সাইনাসের মিউকাস ঝিল্লিতে সৃষ্ট প্রদাহকে সাইনুসাইটিস বলা হয়।
৭) কানের ভেতরে বা বাইরে যে কোন অংশে সংক্রমণ জনিত প্রদাহকে ওটিটিস বলে।
৮) কানের মধ্যকর্ণে সংক্রমণজনিত প্রদাহকে বলা হয় ওটিটিস মিডিয়া।
ষষ্ঠ অধ্যায়: বর্জ্য ও নিষ্কাশন
১) প্রাণিকোষে বিপাকের ফলে সৃষ্ট নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্যপদার্থ রেচন প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে নিষ্কাশিত হয়।
২) মানুষের দুটি বৃক্ক রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে। বাম বৃক্কটি ডান বৃত্কের চেয়ে সামান্য উপরে থাকে।
৩) বক্কের গঠন ও কাজের এককের নাম নেফ্রন। প্রতি বৃত্কে ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ নেত্রন থাকে। এদের মাধ্যমে প্রতি মিনিটে রক্ত থেকে ১২৫ ঘন সে.মি. তরল পদার্থ পরিশ্রুত হয়।
৪) বক্কে দৈনিক ০.৫ থেকে ২.৫ লিটার মূত্র উৎপাদিত হয়। ইউরোক্রোম নামক পদার্থ থাকায় এটি খড় বর্ণের হয়ে থাকে।
৫) কোষ বা দেহাভ্যন্তরীণ অসমােটিক চাপের সক্রিয় নিয়ন্ত্রণকে অসমােরেগুলেশন বলে।
৬) রােগ-ব্যধির কারণে বৃত্কের সক্ষমতা কমে যাওয়াকে বৃক্ক বিকল বলে। এটি দুরকম-দীর্ঘক্ষণিক ও তাৎক্ষণিক
৭) একটি বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লির ভেতর দিয়ে নির্বাচনমূলক ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কোন দ্রবণের কলয়ডাল পদার্থ থেকে দ্রবীভূত পদার্থের পৃথকীকরণের নাম ডায়ালাইসিস।
৮) হিমােডায়ালাইসিসের উদ্দেশে ডায়ালাইসিস টিউবগুলােকে যে দ্রবণে রাখা হয় তার নাম ডায়ালাইসেট।
৯) হাইড্রোজেন আয়ন ঘনত্বের একটি পরিমাপক হচ্ছে PH।
সপ্তম অধ্যায়: চলন ও অঙ্গচালনা
১) অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে গঠিত যে অঙ্গতন্ত্র দেহের কাঠামাে তৈরি করে, নরম অঙ্গুলােকে রক্ষা করে, দেহের ভার বহন করে এবং পেশি সংযােজনের জন্য উপযুক্ত স্থান সৃষ্টি করে তার নাম কঙ্কালতন্ত্র।
২) মানবদেহের কঙ্কালতন্ত্র মােট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত।
৩) সুযুম্নাকান্ডকে ঘিরে অবস্থিত একসারি কশেরুকা নিয়ে গঠিত ও দেহের অক্ষকে অবলম্বনদানকারী অস্থিময় ও নমনীয় গঠনকে মেরুদন্ড বলে। ২৬টি অনিয়ত আকৃতির অস্থি খন্ড নিয়ে মেরুদন্ড গঠিত।
৪) মানবদেহে পর্শুকাগুলাে মিলে যে খাঁচার মতাে আকৃতি সৃষ্টি করে তার নাম বক্ষপিঞ্জর।
৫) অস্থি ও তরুণাস্থি হচ্ছে এক বিশেষ ধরনের যোজক টিস্যু যাদের মাতৃকা বিভিন্ন জৈব ও অজৈব পদার্থে গঠিত হওয়ায় কঠিন আকার ধারণ করে।
৬) মায়াব্লাল্ট নামক আদিকোষ রূপান্তরিত হয়ে তত্ত্বর মতাে লম্বা পেশিকোষ গঠন করে বলে এদের পেশিতন্তু বলে।
৭) কেবলমাত্র হৎপিন্ডের প্রাচীরে অবস্থিত পেশিগুলােকে হৃৎপেশি বলে। এরা গঠনের দিক থেকে রৈখিক কিন্তু কাজের দিক থেকে অনৈচ্ছিক।
৮) আস্থিভঙ্গ তিনধরনের হতে পারে-সাধারণ, যৌগিক ও জটিল।
অষ্টম অধ্যায়: সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ
১) বিভিন্ন অঙ্গতনত্রের পারস্পরিক সহযােগিতামূলক কাজের মাধ্যমে দেহের সকল কর্মকান্ড সুষ্ঠুভাবে সুম্পন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াকে সমন্বয় বলে। সমন্বয় দুধরনের স্নায়ুবিক ও রাসায়নিক সমন্বয়।
২) সুষুম্নাকান্ডের শীর্ষে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে স্ফীত অংশ করােটির মধ্যে অবস্থান করে তার নাম মস্তিস্ক।
৩) মস্তিস্কর বিভিন্ন অংশ হতে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি হয়ে যেসব স্নায়ু করােটিকার বিভিন্ন ছিদ্রপথে বের হয়ে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে বিস্তার লাভ করে তাদের নাম করােটিক স্নায়ু।
৪) চোখ এমন এক জ্ঞানেন্দ্রিয় যা আলােকের মাধ্যমে দৃষ্টি সঞ্চার করে।
৫) কান এমন এক বিশেষ ইন্দ্রিয় যা একাধারে শ্রবণ ও দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে অংশ গ্রহণ করে।
৬) মানবদেহে যাবতীয় কাজে রাসায়নিক সমন্বয়কারী হিসেবে হরমােন নামক এক জৈবরাসায়নিক পদার্থ ভূমিকা পালন করে।
৭) নালিবিহীন গ্রন্থিকে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলে। পিটুইটারি গ্রন্থিকে হরমোন সৃষ্টিকারী প্রধান গ্রন্থি বলা হয়।
নবম অধ্যায়: মানব জীবনের ধারাবাহিকতা
১) যেসব অঙ্গ জীবের জননে প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহণ করে সেগুলোকে একত্রে জননতন্ত্র বলে।
২) শুক্রাশয় হচ্ছে মুখ্য পুংজননাঙ্গ। এখানে শুক্রাণু উৎপন্ন হয়।
৩) ডিম্বাশয় হচ্ছে মুখ্য স্ত্রীজননাঙ্গ। এতে ডিম্বাণু সৃষ্টি হয়।
৪) বয়ােপ্রাপ্ত নারীর যৌন জীবনে প্রায় নিয়মিত, গড়ে ২৮ দিন (২৪-৩২ দিন) পরপর জরায়ু থেকে রক্ত, মিউকাস, এন্ডােমেট্রিয়ামের ভগ্নাংশ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অনিষিক্ত ডিম্বাণুর চক্রীয় নিষ্কাশনের নাম রজঃচক্র।
৫) সেকেন্ডারি যৌন বৈশিষ্ট্যের উদ্ভবসহ জননাঙ্গের সক্রিয় পরিস্ফুটনকালকে বয়ঃসদ্ধি বলে।
৬) যে প্রক্রিয়ায় জননাঙ্গে গ্যামেট সৃষ্টি হয় তার নাম গ্যামেটোজেনেসিস।
৭) শুক্রাণু নিউক্লিয়াস ও ডিম্বাণু নিউক্লিয়াসের একীভবনের মাধ্যমে ডিপ্লয়েড জাইগোেট সৃষ্টি প্রক্রিয়াকে নিষেক বলে।
৮) নিষেকের পর ৬ থেকে ৯ দিনের মধ্যে যে প্রক্রিয়ায় জাইগােটটি ব্লাস্টোসিস্ট অবস্থায় জরায়ুর এন্ডামেট্রিয়াম সংস্থাপিত হয়, তার নাম ইমপ্ল্যান্টেশন।
৯) দেহের বাইরে গবেষণাগারে কাচের পাত্রে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে নিষিক্ত ডিম্বাণুকে জরায়ুতে স্থাপন করে গভধারণ করানাের ব্যবস্থাকে আইভিএফ পদ্ধতি বা কৃত্রিম গর্ভধারণ বলে।
১০) HIV-ভাইরাসের আক্রমণে মানুষর শ্বেতকণিকার ম্যাক্রোফেজ ও T, লিম্ফোসাইট ধ্বংসের ফলে দেহের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থাকে এইডস বলে।
দশম অধ্যায়: মানবদেহের প্রতিরক্ষা (ইমিউনিটি)1)
১) দেহে অণুপ্রবেশকারী কোনাে বহিরাগত পদার্থ যার প্রভাবে রক্তে "অ্যান্টিবডি" নামক বিশেষ প্রােটিন তৈরি হয় তাকে অ্যান্টিজেন বলে। অধিকাংশ অ্যান্টিজেনই প্রােটিন বা প্রােটিন-পলিস্যাকারাইড।
২) দেহের জন্য ক্ষতিকর সব ধরনের জীবাণু বা বিষাক্ত পদার্থ চিহ্নিত করে নিষ্কাশনের প্রক্রিয়াকে প্রতিরক্ষা বলে।
৩) যে প্রক্রিয়ায় শ্বেত রক্তকণিকা ক্ষণপদের মাধ্যমে জীবাণু ধ্বংস করে তার নাম ফ্যাগােসাইটোসিস।
৪) মানবদেহে যে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জন্মের সময় থেকে নয়, বরং জন্মের পর কোনাে নির্দিষ্ট জীবাণুর বিরুদ্ধে সাড়া দেওয়ায় কিংবা ভ্যাক্সিন প্রয়ােগের ফলে সৃষ্টি হয় তাকে অর্জিত প্রতিরক্ষা বলে।
৫) দেহে অনুপ্রবেশকারী জীবাণু বা কোন অবাঞ্চিত বহিরাগত পদার্থকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য মানুষের রক্তের সিরামে উৎপন্ন বিশেষ একধরনের প্রােটিনকে অ্যান্টিবডি বলে।
৬) রােগ সৃষ্টিকারী জীবাণু বা জীবাণুর নির্যাস বা জীবাণু সৃষ্ট পদার্থ (টক্সিন) কিংবা সংশ্লেষিত বিকল্প পদার্থ থেকে উৎপন্ন যে বস্তু অ্যান্টিজেনের মতাে আচরণ করে দেহে অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে এক বা একাধিক রােগের বিরুদ্ধে দেহকে অনাক্রম্য করে তােলে তাকে ভ্যাক্সিন বলে।
৭) অবিভেদিত ও আজীবন বিভাজনক্ষম কোষ যা মানবদেহের প্রায় ২০০ ধরনের বিশেষায়িত কোষ (যেমন B-কোষ, T-কোষ)-এ রূপান্তরিত হতে পারে সে সব কোষকে স্টেমকোষ বলে। স্টেমকোষ দুধরনের : ভূণীয় (embryonic) এবং পরিণত (adult)।
৮) কিছু জমা রাখা এবং প্রয়ােজনে তা স্মরণ করার ক্ষমতাকে স্মৃতি বলে।
একাদশ অধ্যায়: জিনতত্ত্ব ও বিবর্তন
১) সমসংস্থ ক্রোমােজোমের নির্দিষ্ট লােকাসে অবস্থানকারী জিন-জোড়ের একটিকে অপরটির অ্যালীল বলে।
২) মেন্ডেলের প্রথম সূত্রকে পৃথকীকরণ সূত্র বলে কারণ গ্যামেট সৃষ্টির সময় জিনগুলো জোড়া ভেঙ্গে পৃথক হয়ে যায়।
৩) মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্রের নাম স্বাধীনভাবে মিলনের সূত্র কারণ জননকোষ উৎপাদনকালে জিনগুলো জোড়া ভেঙ্গে পরস্পর থেকে স্বতন্ত্র বা স্বাধীনভাবে বিন্যস্ত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন জননকোষে প্রবেশ করে।
৪) F1 জনুতে প্রকট জিন তার বৈশিষ্ট্যকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করতে না পারায় নতুন বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হওয়াকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে।
৫) যে সব জিন বিশেষ বিশেষ অবস্থায় জীবের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পরিবর্তন সাধন করে এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেসব জিনের নাম লিথাল জিন।
৬) জীবের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশে যখন দুটি জিন সমান কার্যকর ভূমিকা পালন করে তখন জিনদুটিকে পরস্পরের পরিপূরক জিন বলে।
৭) একটি জিন যখন অন্য একটি নন অ্যালীলিক জিনের কার্যকারিতা প্রকাশে বাধা দেয় তখন এ প্রক্রিয়াকে এপিস্ট্যাসিস।
৮) সেক্স ক্রোমােজোমের মাধ্যমে সেক্স লিংকড বৈশিষ্ট্যের বংশ পরস্পরায় সঞ্চারিত হওয়ার নাম সেক্স-লিংকড ইনহেরিট্যান্স।
৯) F1 জনুতে প্রকট জিন তার বৈশিষ্ট্যকে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করতে না পারায় নতুন বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হওয়াকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে।
১০) যে সব জিন বিশেষ বিশেষ অবস্থায় জীবের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের পরিবর্তন সাধন করে এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেসব জিনের নাম লিথাল জিন।
১১) জীবের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশে যখন দুটি জিন সমান কার্যকর ভূমিকা পালন করে তখন জিনদুটিকে পরস্পরের পরিপূরক জিন বলে।
১২) একটি জিন যখন অন্য একটি নন অ্যাডিললিক জিনের কার্যকারিতা প্রকাশে বাধা দেয় তখন এ প্রক্রিয়াকে এপিস্ট্যাসিস।
১৩) সেক্স ক্রোমােজোমের মাধ্যমে সেক্স লিংকড বৈশিষ্ট্যের বংশ পরম্পরায় সঞ্চারিত হওয়ার নাম সেক্স-লিংকড ইনহেরিট্যান্স।
১৪) মন্থর গতিসম্পন্ন এবং প্রতিনিয়ত পরিবর্তনের মাধ্যমে সরলদেহী জীব থেকে জটিল জীবের আবির্ভাবকে অভিব্যক্তি বলে।
১৫) ল্যামার্কের মতবাদের নাম অর্জিত বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার মতবাদ।
১৬) ডারউইন এর মতবাদকে প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদ বলা হয়।
১৭) শিলাস্তরে প্রাপ্ত অতীত জীবনের যে কোন চিত্নকে জীবাশ্ম বলে।
১৮) প্রাণিদের বিস্তারের উপর ভিত্তি করে ওয়ালেস পৃথিবীকে ৬টি প্রাণিভৌগােলিক অঞ্চলে বিভক্ত করেন।
দ্বাদশ অধ্যায়: প্রাণীর আচরণ
১) কোনাে আচরণগত সাড়ার ব্যপ্তি ও প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটার পেছনে বিভিন্ন উদ্দীপনার সম্মিলন কাজ করে। বিভিন্ন উদ্দীপনার এই সক্মিলন মােটিভেশন বা প্রেরণা নামে পরিচিত।
২) আরচণগত পরিবর্তনের সহায়ক সংকেতকে সাংকেতিক উদ্দীপনা বা উদ্দীপনা নামে অভিহিত করা হয়।
৩) দিকমুখি উদ্দীপনা বা উদ্দীপনা মাত্রার তীব্রতার প্রতি একটি জীবের সহজাত আচরণগত সাড়া দেওয়া হচ্ছে ট্যাক্সিস।
৪) জন্মগত যে শক্তির সাহায্যে একটি প্রজাতির সকল সদস্য কোনাে শিক্ষণ ছাড়া এবং উদ্দেশ্য ও ফলাফল সম্বন্ধে অবহিত না থেকে আত্মরক্ষা ও প্রজাতি রক্ষায় বংশপরম্পরায় একই ভাবে কাজ করে থাকে সেটি সহজাত আবেগ বা ইনসটিংক্ট।
৫) স্থায়ী বাসভূমি থেকে নতুন কোনাে অনুকূল পরিবেশে যাত্রা এবং যেখানে সাময়িক বসবাসের পর পুনরায় স্থায়ী বসতিতে প্রত্যাগমনকে পরিযান বা মাইগ্রেশন বলে।
৬) যে প্রক্রিয়া একেক সদস্যের আচরণের অভিজ্ঞতার আলােকে অভিযােজনিক পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় সে প্রক্রিয়া শিখন নামে পরিচিত।
৭) যে আচরণে প্রাণী শুধু নতুন উদ্দীপনায় অভ্যস্তই হয়না, বরং কম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দীপনা বর্জনেও উদ্যোগী হয় তাকে অভ্যাসগত আচরণ বলে।
৮) শৈশবে প্রতিটি প্রাণীর মগজে যা কিছু মুদ্রিত (imprint) হয় পরবর্তীতে তার আলােকেই সে বিভিন্ন উদ্দীপনায় সাড়া প্রদান করে থাকে। একে অনুকরণ বলে।
৯) কোনাে একটি প্রাণী প্রজাতির বিভিন্ন সদস্যের মাঝে নির্দিষ্ট সময়ে বা সারাজীবন ব্যাপী আত্মত্যাগ, সংহতি, সহনশীলতা, শৃঙ্খলাবদ্ধতার ভিত্তিতে বসবাসের জন্য যে আচরণ প্রকাশিত হয় তাকে সামাজিক আচরণ বলে।
১০) সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়ায় একই প্রজাতির কতক প্রাণী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বা ব্যক্তিগত প্রজননিক (reproductive) অসুবিধা ভােগ করে অপর সদস্যদের কল্যাণে নিজের সময় ও শক্তি উৎসর্গ করে তাকে অ্যান্ট্রইজম বলে।
১১) আতিটি মৌচাকে তিন ধরনের মৌমাছি থাকে-একটি রাণী, কয়েকশ পুরুষ এবং ১০-৮০ হাজার কর্মী।