শুরুতেই বলে নিতে হয়, পরীক্ষার আগের রাতে কিভাবে কি করলে আপনি পরীক্ষাতে রিলাক্স থাকতে পারেন, ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারেন তা সম্পূর্ন আপনার নিজস্ব পদ্ধতি। আমাদের এই লেখা পড়ার পর তা পাল্টানোর চিন্তাও করা উচিত নয়। তবে আপনি যদি পরীক্ষার আগের দিন, রাত এবং পরীক্ষার দিন নিয়মিত ভুল করতে থাকেন ফলে ফলাফল খারাপ হয় সেক্ষেত্রে আমাদের এই সাজেশন গুলোতে চোখ বুলিয়ে নিয়ে নিজের মতো করে একটি রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। আমাদের দেয়া সাজেশন ১০০ ভাগ মানতে যাবেন না, ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে অগ্রাধীকার দিন।
রিভিশন দেব কিভাবে?
প্রথম আপনার সিলেবাসকে ঠিকভাবে বুঝতে হবে। কোন অধ্যায় থেকে কতগুলো প্রশ্ন আসবে, কোনগুলো আপনি ভালো পারেন, কোন অধ্যায় গুলো থেকে প্রশ্ন আসলে উত্তর করতে পারবেন এবং আনুমানিক সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চের একটা রেঞ্জ ধরে নিয়ে ওভারাল ফলাফল কি হতে পারে তা হিসাব করতে হবে পরীক্ষার অনেক আগেই। পড়ার সময় কী টপিক গুলো আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে রাখা উচিত যাতে করে পরীক্ষার আগে তা রিভাইস করতে অসুবিধা না হয়। যেগুলো ভালো পারেন পরিক্ষার আগে সেগুলোই আরও কনফার্ম হওয়া অধীক কার্যকরী।
পরীক্ষার আগের রাত
ব্রেইনে চাপ পরার মতো কোনো কাজই পরীক্ষার আগের রাতে করা উচিত না। অনেকেই সারারাত জেগে পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে থাকে। এতে যদি সে অভ্যস্ত হয়ে থাকে এবং পরীক্ষা ভালো হয় তবে সেটা তাঁর নিজের ব্যাপার। অন্যদের সেভাবে চেষ্টা করার মানেই হয় না। পরীক্ষার আগের রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া উচিত, তাড়াতাড়ি বলতে এতো তাড়াতাড়ি না যাতে করে আবার রাত ৩ টায় ঘুম ভেঙে গিয়ে বাকি সময় জেগে থাকতে হয়।
ভালো একটা ঘুম ফ্রেশ ব্রেইনের জন্য অনেক বেশি প্রয়োজন। আর পরীক্ষার আগের দিন বা রাতে অবশ্যই পরীক্ষার হলে যা যা নিয়ে যেতে হবে তা গুছিয়ে ফাইলবন্দি করে রাখতে হবে। কি কি প্রয়োজন তা সার্কুলার দেখে দেখে মিলিয়ে নেয়া উচিত। এবং পরীক্ষার উদ্দেশ্যে বাসা ত্যাগ করার আগ মূহুর্তে তা আবার চেক করে নিলে ভালো হয়। ক্যালকুলেটর, কলম সব কিছু পরীক্ষা করে নিতে হবে যে তারা ঠিক ভাবে কাজ করছে কি না?
পরীক্ষার দিন কি কি করা উচিত?
ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ে অন্যান্য কাজ গুলো ঠান্ডা মাথায় করার চেষ্টা করতে হবে। খাওয়া, গোসল করলে গোসল সবই করতে হবে ধীরসুস্থে, ঠান্ডা মাথায়। উত্তেজিত হওয়া চলবে না এবং টাইম ম্যানেজ করে চলতে হবে যাতে করে পরীক্ষার আগে তাড়াহুড়ো না করতে হয়। পরীক্ষা কেন্দ্র নতুন হলে অন্তত ১ ঘন্টা আগে যেন পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে পারা যায় সে অনুযায়ী বাসা থেকে রওনা দেবে। পরিচিত পরীক্ষাকেন্দ্র হলেও এমনটাই করা উচিত যাতে করে রাস্তার জ্যাম বা অন্য কোনো প্রতিকূলতা আপনাকে সময়মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানো থেকে আটকানোর কারণ না হতে পারে।
পরীক্ষা চলাকালীন যা যা করতে হবে
- পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের পূর্বেই বাথরুম থেকে একবার ঘুড়ে আসতে হবে যাতে করে পরীক্ষার সময় বাইরে বের হয়ে সময় নষ্ট করতে না হয়।
- পরীক্ষার হলে পানির বোতল সাথে করে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি থাকলে পানির বোতলও নিয়ে যাওয়া উচিত যাতে করে পরে সময় নষ্ট না হয়।
- প্রশ্নে কোনো ছাপা না থাকলে, ছেড়া থাকলে, অস্পষ্ট লেখা থাকলে হল পরিদর্শককে অনতিবিলম্বে জানানো।
- নিজের রোল, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ অন্যান্য সকল তথ্য খুব মনোযোগের সাথে পূরন করা। রোল নম্বর বা রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা সেট কোড বা অন্য যেকোনো তথ্য ভুল ভাবে পূরন করে ফেললে ঘাবড়ানো যাবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক/শিক্ষককে সাথে সাথে অবহিত করতে হবে। তিনি সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবেন।
- প্রশ্ন কঠিন মনে হলেও মনোবল হারানো যাবে না। ভেঙে পরলে কিংবা ভয় পেলে জানা অনেক কিছুও অজানা বলে মনে হয়।
- যেসকল প্রশ্নের উত্তর ভালোভাবে পারবেন সেগুলো আগে দেয়ার চেষ্টা করবেন।
- খাতা জমা দেয়ার আগে ভালোভাবে রিভাইস করবেন যাতে করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো বড় ভুল (যেমন রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, সেট কোড, প্রশ্নের উত্তরের নম্বর ভুল করা, লুজ শিট গুলো এলোমেলো হয়ে যাওয়া) থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সব কথার শেষ কথা হলো, এসবই সাধারন গাইডলাইন। এগুলোকে মাথায় রেখে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে হবে নিজের করণীয়। আর আত্মবিশ্বাসী হতে হবে সবসময়।
Tags:
guideline