Textile শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ Textilis থেকে যার অর্থ বোনা হয়েছে এমন কিছু৷ এই শব্দটির ক্রিয়াবাচক রূপ Textere যার অর্থ To weave বা বোনা। নাম থেকে ধরে নেয়াই যায় Textile মানে বুনন করা, বুননকৃত এবং বুনন সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি। কিন্তু প্রকৃতার্থে তা ঠিক না৷ Textile শব্দটির পরিসর আরও ব্যাপক।
বুনন করতে প্রয়োজন সুতা (Yarn), সেই সুতা তৈরি হয় তন্তু (Fiber) থেকে। এই ফাইবার আসে বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে, খনিজ থেকে, প্রাণি থেকে। আবার ইয়ার্ন আর ফিলামেন্ট থেকে তৈরি করা হয় কাপড়, সেখান থেকে পরনের পোশাক। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার প্রত্যেকটি ধাপ ও ধাপগুলোর আনুষঙ্গিক সকল প্রক্রিয়া বুঝাতেই বর্তমান সময়ে টেক্সটাইল শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
তন্তু আর সুতাকে বলা হয় টেক্সটাইলের মূল। এই ফাইবার প্রকৃতি থেকেও যেমনি আসে, তেমনি প্রযুক্তির বিকাশের ফলে কৃত্রিমভাবেও তৈরি হচ্ছে। প্রাকৃতিক টেক্সটাইল ফাইবার নিয়েই এই আর্টিকেল।
ফাইবারের আলোচনায় যাওয়ার আগে ফাইবার কি এবং টেক্সটাইল ফাইবার কি তা সম্পর্কেও ধারণা নেয়া যাক কিছুটা। মূলত ফাইবার বলতে সেটাকেই বুঝানো হবে যার একটি আঁশের মতো গঠন (Fibrous Structure) থাকবে এবং ব্যাসের থেকে দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ১০০ গুণ বড় হবে। এই শর্ত গুলো মাকড়সার জালে থাকা আঁশও পূরণ করে। কিন্তু তাই বলে তা দিয়ে কি সুতা তৈরি করা যায়? জামা তো অনেক পরের কথা।
তারমানে টেক্সটাইল ফাইবার হতে হলে তাকে আরও কিছু বৈশিষ্ট্য নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে। যার মধ্যে অন্যতম হলো একে সহজেই পাকিয়ে সুতা তৈরি করা যাবে, সহজে রঙ করা যাবে, সূক্ষ্মতা থাকবে এবং বল প্রয়োগ করে বিকৃতি ঘটানোর পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসার প্রবণতা থাকবে। এসকল বৈশিষ্ট্য থাকলেই কেবল তাকে টেক্সটাইল ফাইবার বলা যাবে, অন্যথায় ফাইবার হলেও টেক্সটাইল ফাইবার হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। উদাহারন হিসেবে টানা যায় পাটের আঁশ ও কলাগাছ থেকে প্রাপ্ত আঁশের কথাতে, যেখানে পাটের আঁশকে টেক্সটাইল ফাইবার বলা গেলেও Banana Fiber কে টেক্সটাইল ফাইবার বলা যাবে না।
এই ব্যানানা ফাইবার আর জুট ফাইবার দুটোই প্রাকৃতিক ফাইবার৷ দুটোই আবার আসে গাছ থেকেই। যেহেতু কথা বলব টেক্সটাইল ফাইবার নিয়ে তাই ব্যানানা ফাইবার আপাতত বাদ যাক৷ গাছের বাকল থেকে আসা ফাইবারের তালিকায় থাকবে জুট ফাইবার, হেম্প ফাইবার, কেনাফ ইত্যাদি ফাইবারের নাম। এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া প্রাচীন শার্টের মধ্যে সবথেকে পুরোনো শার্টটি তৈরি লিনেন ফাইবারের কাপড় থেকে, যেই লিলেন ফাইবারও গাছের বাকল থেকেই আসে।
কোনো
কাপড় কিনতে গেলেই আমরা, বিশেষত বয়স্করা যে কাপড়ের খোঁজ
করেন তা হলো সুতি
বা কটন৷ এই কটন
ফাইবার সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়
টেক্সটাইল সেকটরে। কটনের সাথে Coir আর শিমুল তুলা
আসে গাছের ফল বা বীজ
থেকে। পাতা থেকে আসে
পাইনএপেল লিফ ফাইবার, সিসাল,
আবাকার মতো ফাইবার। এতোক্ষণ
ধরে যত গুলো ফাইবারের
নাম বলা হলো সবই
আসে প্রকৃতি থেকে, উদ্ভিদ থেকে। প্রাণি আর খনিজ উৎস
থেকেও আসে কিছু ফাইবার।
উল ফাইবার আর রেশম আসে
প্রাণির থেকে। ভেড়া, বিশেষ প্রজাতির ছাগল (কাশমীর অঞ্চলের এক প্রকার ছাগল),
কিছু প্রজাতির উটসহ আরও অনেক
প্রাণির দেহের চামরা থেকে পাওয়া যায়
উল (Wool) ফাইবার। আর সিল্ক বা
রেশম আসে রেশম পোকার
থেকে বিশাল এক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে
যাকে সেরিকালচার বলা হয়।