আমাদের মধ্য থেকে অনেকেই জীবনের একটা পর্যায়ে স্বপ্ন দেখি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশুনা করার, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এইচএসসির ফলাফল ভালো না হলে ভালো প্রতিষ্ঠানে সিএসই নিয়ে পড়ার সুযোগ আর থাকে না। সেক্ষেত্রে অনেকেই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ার চেষ্টা করে। তবে অনেকেরই প্রাইভেটে পড়ার মতো সামর্থ্য না থাকায় স্বপ্নটাই দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। তবে তারা জানেই না যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (National University) এর প্রফেশনাল কোর্সের অধীনে সিএসই পড়া যায়।
আমরা অনেকেই হয়তোবা জানিনা যে National University তে Computer Science and Engineering আছে! এটা অনার্স প্রফেশনাল কার্যক্রমের আওতাভূক্ত। মোট ৮ টা সেমিস্টার আর প্রতি সেমিস্টারে মানসম্মত সিলেবাস। বাংলাদেশের অনেক ভার্সিটির CSE সিলেবাস থেকে National University র এই সিলেবাস অনেকটা সুগঠিত। যেহেতু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স মূলত প্রাইভেট কলেজ সমূহে পড়ানো হয় তাই কিছু কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকেও যে এখানে এফোর্ট একটু বেশি দেয়া হয় তা বলা যেতে পারে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেশনাল কোর্সসমূহের মধ্যে CSE অন্যতম।
১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর কার্যক্রম শুরু হয় এবং শেখ বোরহানউদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে (ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিপরীতে) মূলত এ কার্যক্রম প্রথম শুরু হয়। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী ঢাকার মধ্যে ২১টি প্রতিষ্ঠানসহ দেশের মোট ৩৯টি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে CSE কোর্স চালু রয়েছে। CSE পড়ানো হয় এমন সব কলেজের তালিকার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
National University এর Professional এ Apply, তথ্য গ্রহন করতে এখানে Click করুন
সারা বাংলাদেশেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল কোর্সের কার্যক্রম বিদ্যমান তবে CSE সব কলেজে পড়ানোর মত মেটেরিয়াল না থাকায় খুব কম কলেজেই এই বিষয়কে কার্যক্রম অওতাভুক্ত করা হয়েছে। যদি আপনি National professional এ CSE তে ভর্তি হতে চান তবে মনে রাখবেন, যে কলেজে ভর্তি চান তার Lab এ যথেষ্ট ফ্যসিলিটি আছে কিনা তা ভালোভাবে জেনে নিবেন আগে থেকে। এটা অবশ্যই প্রথমে অপনাকে খবর নিয়ে দেখতে হবে! কারণ সিএসই ল্যাব ছাড়া অসম্ভব এটা সবাই জানে।
আপনার যদি Computer, programming, software designing এর প্রতি ইচ্ছা থাকে তবে অবশ্যই আপনি NU CSE তে Apply করতে পারেন। আর এ যুগে অবশ্যই এই Subject টির মূল্য যথেষ্ট বেশি তা আর নতুন করে বলার কিছু নয়। আমি মনে করি সমাজের অন্যদের গৎবাঁধা বুলি শুনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পছন্দের নয় এমন Subject পড়ার থেকে NU তে আপনার প্রিয় Subject পড়া হাজার গুনে বুদ্ধিমানের কাজ। অবশ্যই মনে রাখবের আপনি যে Subject এই পড়েন না কেন, যদি তাতে পারফেক্ট হয়ে উঠতে পারেন তবে ভবিষ্যতে কর্মের চিন্তা করতে হবে না!
শেষ করার আগে আরও একবার বলতে চাচ্ছি, আপনি যদি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে চান কিন্তু বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট, সাস্ট বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার মতো আত্মবিশ্বাস না থাকে কিংবা ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার মতো যথেষ্ট জিপিএ কিংবা মোট নাম্বার না থাকে তাহলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তেই পারেন। সিএসই এর ক্ষেত্রে আপনার যোগ্যতাই মূল অস্ত্র। অবশ্যই বুয়েট, রুয়েট, সাস্ট নামগুলো ব্র্যান্ড। তবে যোগ্যতা অর্জন করে নিলে আপনার ক্যারিয়ার আপনার হাতেই। তবে এটাও মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে সিএসই ইঞ্জিনিয়ারদের সংখ্যা কিন্তু প্রচুর। এদেশে নতুন কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হলে সেখানে আর কোনো বিষয়ের কোর্স থাকুক বা না থাকুক, সিএসই কিন্তু ঠিকই আছে। তাই শুধু শখ, স্রোত, সম্মান, ফ্লেক্সের বিষয়ে না ভেবে সত্যিই আমি পারব কি না সেরাদের একজন হয়ে ওঠতে সে সম্পর্কে শিউর হতে হবে। নয়তো কোর্স শেষে বেড়ে যেতে পারে আরও একজন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই পড়া উচিত হবে কি না তা নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখতে পারেন নিচের ভিডিয়োটি। আশা করি অনেক প্রশ্নের উত্তরই পেয়ে যাবেন এখান থেকে।
পাঠগৃহের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।