অনার্স লেভেলে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের মধ্যে "বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থান বর্ণনা কর" প্রশ্নটি অন্যতম। এ প্রশ্নটি অনেক সময় এভাবে আসতে পারে যে "বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি অবস্থান ব্যাখ্যা কর"। এ লেখাটির মাধ্যমে আমরা আপনাদের সামনে পুরো প্রশ্নটির সহজ উত্তর ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি এবং পুরো লেখাটি পড়ার পরে আপনি নিজেই ব্যাখ্যা করতে পারবেন বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি বা ভৌগলিক অবস্থান সম্পর্কে।
বাংলাদেশের ভৌগােলিক অবস্থান
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত একটি দেশ। এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ। এর অবস্থান ২০°৩৪” উত্তর হতে ২৬°৩৮” উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°১” পূর্ব ৯২°৪১” পূর্ব দাঘ্রিমাংশে। ভৌগলিক অবস্থান থেকে বাংলাদেশ শুরু থেকেই বসবাসের উপযোগী এর কারণে যুগে যুগে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর এখানে এসে নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে।
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ এই কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এই অঞ্চলে মানুষদেরকে আসতে দেখা গেছে এবং বসতি স্থাপন করতে দেখা গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে যেহেতু বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ এবং এ অঞ্চলের নদীর পরিমাণ অনেক বেশি সেহেতু পলিমাটি বিভিন্ন উর্বর স্থানের সৃষ্টি করেছে যাতে করে ফসল উৎপাদন এবং মৎস্য আহরণ সহ আরো অনেক সাহায্য মানুষজন পেয়ে থাকবেন। এ কারণে এই অংশটিতে বিভিন্ন সময় মানুষকে বসতি স্থাপন করতে দেখা গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ মূলত সেই অঞ্চল জুড়ে রয়েছে।
মৌসুমী বায়ুর প্রবাহ
মৌসুমী বায়ুর সঠিক প্রবাহ বাংলাদেশের উপর দিয়ে যেতে দেখা যায়। এতে করে সঠিক সময়ে আমরা বৃষ্টিপাত হতে দেখি আর এই কারণে এদেশে খরা ও অতিবৃষ্টি অন্যান্য জায়গার তুলনায় কম দেখা যায় এর মূল কারণ হচ্ছে সঠিকভাবে মৌসুমি বায়ু আমাদের এই ভূ-প্রকৃতির উপর দিয়ে যাওয়া।
বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল
বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল দেখা যায় এবং এই সকল পাহাড়ি অঞ্চল গুলো মূলত আবহাওয়া এবং মৌসুমের পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। এরা যেমন বিভিন্ন ফসল উৎপন্ন করায় ভূমিকা রাখে ঠিক তেমনিভাবে পর্যটন ও অন্যান্য কাজ করার ক্ষেত্রে ও গবেষণার ক্ষেত্রে পাহাড়ি অঞ্চলের দরকার হয়।
বাংলাদেশ ও সমুদ্র
বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থান করছে বঙ্গোপসাগর। এদেশের সঙ্গে অন্যান্য দেশের সমুদ্রের মাধ্যমে যাতায়াত ব্যবস্থাকে সচল করেছে বঙ্গোপসাগর এবং এর মাধ্যমে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার পণ্য আমদানি রপ্তানি করা হয়ে থাকে। সমুদ্রের তীরবর্তী হওয়ার সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে এতেকরে অনেক অর্থের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে পণ্য আমদানি রপ্তানি করা যায়। এতে করে একটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নতির ক্ষেত্রে সমুদ্রের ভূমিকা অনেক বেশি হয়ে থাকে।
প্রাকৃতিক সীমানার দিক থেকেও বাংলাদেশ অনেকটা সাহায্য পেয়ে থাকে। এর কারণ হচ্ছে এদেশ পাহাড়-পর্বত, নদী-নালা ও গহীন অরণ্য দ্বারা বেষ্টিত এর কারণে বিভিন্ন সময়ে প্রাকৃতিক ঝড়-বাদল থেকে এছাড়া দমকা হওয়া থেকে মানুষের বসবাস করা স্থানগুলো রক্ষা পেয়ে থাকে। এছাড়া একইভাবে সুন্দরবন অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ বনভূমি মূলত সামুদ্রিক বিভিন্ন ঝড় থেকে দেশকে রক্ষা করছে। পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন অংশ প্রাকৃতিক ভাবে বেষ্টনী দ্বারা আবদ্ধ।
আরো পড়ুন: বাঙালি জাতিকে সংকর জাতি কেন বলা হয়
উপরোক্ত এই সকল কারণে বাংলাদেশকে নাতিশীতোষ্ণ দেশ এবং এই দেশে বসবাসরত মানুষজন প্রকৃতি দ্বারা তেমন বাজেভাবে প্রভাবিত হয় না। বিভিন্ন সময় এদেশের মানুষ প্রকৃতিকে ব্যবহার করে খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। এই সুন্দর ভূ-প্রকৃতির কারণে মূলত বিভিন্ন সময় মানুষ এই অঞ্চলকে বেছে নিয়েছেন নিজেদের সভ্যতা গড়ে তোলার জন্য।
পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ: প্রাচীন বাংলার জনপদ গুলোর বিবরণ দাও