মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা কাকে বলে তা আমরা আগের পর্বে জেনেছি। "এসএসসি গণিতের বাস্তব সংখ্যা" সিরিজের ২য় পর্বে আমরা জানব, কিভাবে মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা আমরা চিনতে পারব? মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা চেনার উপায় আসলে কী? তাহলে শুরু করা যাক।
সূচিপত্র (toc)
- মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা কাকে বলে তা জানা না থাকলে পড়ুন: বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে? বাস্তব সংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস ও বৈশিষ্ট্য।
মূলদ সংখ্যা চেনার উপায়
মূলদ সংখ্যা চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে গেলে আমাদেরকে মূলদ সংখ্যার প্রকারভেদ জানতে হবে। বস্তুত, প্রকারভেদ জানলেই আমরা চিনে নিতে পারব কোনটি মূলদ সংখ্যা এবং কোনটি তা না। তাহলে আমরা প্রকারভেদ দিয়েই শুরু করি।
মূলদ সংখ্যার প্রকারভেদ
মূলদ সংখ্যাকে মূলত ২ ভাগে ভাগ করা যায়। যার একটি হচ্ছে পূর্ণ সংখ্যা বা Integer এবং অন্যটি ভগ্নাংশ বা Fraction। এখন কোনটি মূলদ সংখ্যা এবং কোনটি অমূলদ সংখ্যা তা আমরা কিভাবে নির্ণয় করব? আমরা শুধু প্রকারভেদগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখব, তবেই হবে। তাহলে আমরা প্রকারভেদ, তাদেরও উপপ্রকার এবং তা থেকে মূলদ সংখ্যা চিহ্নিত করার উপায় নিচে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
পূর্ণ সংখ্যা (Integer)
ভগ্নাংশ নয় এমন যেকোনো ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক সংখ্যার সাথে শূন্য (০) কে পূর্ণসংখ্যা বলা হয়। অর্থাৎ, ... -3, -2, -1, 0, 1, 2, 3... । এইসব গুলোই পূর্ণ সংখ্যা। এবং যেহেতু পূর্ণ সংখ্যা আসলে মূলদ সংখ্যার একটি প্রকার, তাই এই সবগুলো সংখ্যাও আসলে মূলদ সংখ্যা।
এই পূর্ণসংখ্যাকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যা (1, 2, 3, 4, 5, ...., 100, ..., 1000... ....)
- শূন্য (0)
- ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা (... -5, -4, -3, -2, -1)
এই সবগুলোই আসলে পূর্ণ সংখ্যা তথা মূলদ সংখ্যা। পূর্ণ সংখ্যাকে `\mathbb{Z}` দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
- যেহেতু সকল পূর্ণসংখ্যাই মূলদ সংখ্যা, তাই এমন ভাগ যা ভগ্নাংশের মতো করে লেখা আছে এবং যার ভাগফল আসলে পূর্ণসংখ্যা, সেই সংখ্যাই মূলদ সংখ্যা। যেমন: `\frac{10}2,\frac{25}5` ইত্যাদি।
- পূর্ণ বর্গমূল সমূহও এই একই নিয়মে মূলদ সংখ্যা। যেমন, `\sqrt4=2,\sqrt{16}=4,\sqrt{144}=12` ইত্যাদি।
এখানে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যাকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়।
- মৌলিক সংখ্যা
- যৌগিক সংখ্যা
মূলদ সংখ্যা চিনতে আমাদের এদুটির বিস্তারিত জানার প্রয়োজন নেই। তবুও চাইলে বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন নিচের লিংকড আর্টিকেল থেকে।
- মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, কী কী ও নির্ণয় করার পদ্ধতি
- যৌগিক সংখ্যা কাকে বলে, কী কী? এবং নির্ণয় করার পদ্ধতি
ভগ্নাংশ
ভগ্নাংশ নিয়ে বিস্তারিতও আমরা পরবর্তীতে জানব। আজকে শুধু জেনে রাখব যে, ভগ্নাংশ যে মূলদ সংখ্যাই সেটা কিভাবে বুঝব।
এর জন্য যে ভগ্নাংশটি মূলদ কি তা তা পরীক্ষা করতে চাচ্ছেন, সেটি ক্যালকুলেটরে বসান। বসিয়ে ভাগ করেন, ভাগফল দেখেন।
যদি এক্ষেত্রে ভাগফলটির একটি শেষ থাকে যা ক্যালকুলেটরেই দেখা যাচ্ছে এমন হয়, তবে তা নিঃসন্দেহে মূলদ সংখ্যা। যেমন, `\frac{2}{5}=0.4,\frac{3}{5}=0.6` এখানে দুটি ভগ্নাংশকেই দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ করলে তার একটি শেষ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ, ভগ্নাংশটি সসীম দশমিক ভগ্নাংশ। এমন ভগ্নাংশ মূলদ সংখ্যা।
অন্য প্রকার ভগ্নাংশ মূলদ সংখ্যা হয় আবৃত দশমিক সংখ্যা। এই রকম দশমিক ভগ্নাংশের কোনো শেষ নেই, তবে একই সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্নে বারবার আসছে। এমন হলেও তা মূলদ সংখ্যা। যেমন: `\frac{2}{3}=0.66666666666...,\frac{69}{45}=1.5333333333.....` ইত্যাদি।
এমন করে যেকল সংখ্যাই দশমিকের পর একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন ফলো করবে তারাই মূলদ সংখ্যা। আরও কিছু উদাহারণ হচ্ছে,
ক) 0.24242424242424....
খ) 6.782641641641641641...
গ) 140.123123123123123... ইত্যাদি।
অমূলদ সংখ্যা চেনার উপায়
অমূলদ সংখ্যা চিনতে গেলে অমূলদ সংখ্যার প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে হবে। অমূলদ সংখ্যার প্রকার বলতে আছেই একটি। শুধুই অসীম অনাবৃত দশমিক সংখ্যা। অর্থাৎ যে সংখ্যার দশমিকের পরে কোনো শেষ নেই এবং এর কোনো প্যাটার্নও নেই, সেই সংখ্যাই অমূলদ সংখ্যা।
যেমন, `\sqrt7=2.645751311....` `1.123456789101115147856...` ইত্যাদি।
তাহলে আশা করছি মূলদ এবং অমূলদ সংখ্যা চিহ্নিত করতে বললে এখন সহজেই চিনতে পারবেন। এ পর্ব এ পর্যন্তই।
Tags:
SSC_Math